ইরানের পক্ষে-বিপক্ষে যেসব দেশ

ইরানের পক্ষে-বিপক্ষে যেসব দেশ

ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানি হত্যার বদলা নিতে বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুই মার্কিন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইরান। এতে ৮০ জন মার্কিন সেনা নিহত এবং আরও ২০০ জন আহত হন বলে দাবি করা হয়।

 

এর আগে গত শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) ইরাকের বাদদাদে বিমানবন্দরের বাইরে সোলাইমানির গাড়ি বহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী।
এ ঘটনার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের অবস্থান পরিস্কার করে। কোনো দেশ সরাসরি ইরানের পক্ষে, কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে, আবার অনেক দেশ নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখে।
১. রাশিয়া:
রাশিয়াও যুক্তরাষ্ট্রের হামলারি বিরোধীতা না করে কৌশলী ভুমিকা নিয়েছে। তবে সোলেমানির প্রশংসা করে দেশটি বলেছে, সোলাইমানি ইরানি নাগরিকদের রক্ষায় কাজ করছিলেন। এজন্য ইরানি জনগণের প্রতি সমবেদনা জানান। যুক্তরাষ্ট্র হামলা অব্যহত রাখলে পরমাণু যুদ্ধ হতে পারেও হুশিয়ারি দেয় রাশিয়।
২. আরব আমিরাত:
সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনোয়ার গারশাল বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের এই উত্তাপ কমানোর জন্য পারস্পারিক প্রতিশোধ নেয়া বন্ধ হওয়া দরকার। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের উচিৎ সম্পূর্ণ অস্ত্র বিরতি পালন করা।
৩. মালয়েশিয়া:
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ যুক্তরাষ্ট্রের হামরার কড়া প্রতিবাদ জানান। সোলাইমানিকে হত্যার পর তিনি বলেন, এখন আমরা কেউ নিরাপদ নই। যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন আমাকেও নিশানা করতে পারে। মুসলিম বিশ্বের নেতাদের মধ্যে মাহাথির একমাত্র কড়া ভাষা ব্যবহার করেন।
৪. সৌদি আরব:
সৌদি আরব মার্কিন হামরার চুপ থাকলেও ইরানের পাল্টা হামলার পরপরই মুখ খোলে। দেশটি সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং রিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, ইরান যে হামলা চালিয়েছে তা ইরাকের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন।
৫. পোল্যান্ড:
পোল্যান্ডের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইরানের হামলায় ইরাকে থাকা পোল্যান্ডের সেনাদের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে এই হামলা নিয়ে দেশটির অবস্থান কোনো পক্ষে তা পরিস্কার করেননি তিনি।
৬. যুক্তরাজ্য:
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক স্থাপনায় ইরানের এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, ইরানকে বলবো, এ ধরণের বিপজ্জনক হামলা যেন তারা আর না করেন এবং দ্রুত যেন অস্ত্র বিরতিতে যান।
৭. ইরাক:
ইরাকের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী আবদেল আব্দুল মাহদি যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে আগ্রাসন হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সোলাইমানির ওপর যেভাবে হামরা চালানো হয়েছে তা, ইরাক ও ইরাকের জনগণের জন্য সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন।
অন্যদিকে ইরাকি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়ে, ইরান যে হামলা চালিয়েছে তাতে ইরাকের কোনো সামরিক সদস্য বা কোনো ইরাকি নাগরিকের ক্ষতি হয়নি।
৮. জাপান:
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে বলেন, উভয় পক্ষকে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখতে জাপান সব রকম সহায়তা করবে। তবে উত্তেজনার মধ্যে জাপান প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও ওমান সফর বাতিল করা হয়।
৯. অস্ট্রেলিয়া:
ইরানের হামলার পরপরই অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, ইরাকে থাকা অস্ট্রেলিয়ান সেনাদের সবাই নিরাপদে রয়েছে। ইরাকে বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ৩০০ সেনা রয়েছে।
১০. ফিলিপিন্স:
ইরাকে থাকা ফিলিপিন্সের নাগরিকদের দ্রুত সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র ইদুয়ারদো মেনদেজ বলেন, ইরাকে বর্তমানে সতর্ক সংকেত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে সেখানে আর ফিলিপিন্সের নাগরিকদের থাকা সম্ভব নয়।
১১. পাকিস্তান:
ইরাকি স্থাপনায় ইরানের হামলার পরপরই পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে ইরাকে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়। তবে হামলার পক্ষে-বিপক্ষে তারা কোনো মন্তব্য করেনি।
১২. ডেনমার্ক:
ডেনমার্কের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইরাকে থাকা ডেনিশ সেনাদের কোনো ক্ষতি হয়নি। দেশটিও হামলার পক্ষে-বিপক্ষে কোনো মন্তব্য করননি।
১৩. ভারত:
ভারতও হামলার বিষয়ে কোনো দেশের পক্ষ না নিয়ে ইরাকে থাকা দেশটির নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়। একই সঙ্গে জরুরী কাজ ব্যতীত ইরাকে গাড়ি ভ্রমণ না করারও পরামর্শ দেয়।
১৪. নিউজিল্যান্ড:
মার্কিন স্থাপনায় ইরানের হামলার প্রেক্ষিতে নিউজিল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন পিটার উভয় দেশকে অস্ত্রবিরতি পালনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এখন দুই দেশের অস্ত্রবিরতি পালনের সময়।
১৫. সিরিয়া:
ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্ঘাতের বিষয়ে সিরিয়া সরাসরি ইরানের পক্ষে অবস্থান নেয়। তারা যুক্তরাজ্যের এ হামলাকে তেল সম্পদ নিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা বলে আখ্যায়িত করে। এ হামলার ফলে প্রতিরোধ আন্দোলনগুলো আরও শক্তিশালী হবে বলে মন্তব্য করেন ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
১৬. তুরস্ক:
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন হামলার সরাসরি বিরোধীতা না করলে তারা সব ধরণের বিদেশি আগ্রাসনের বিরোধী বলে মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে তুরস্ক সব ধরণের গুপ্ত হত্যারও বিরোধী বলে মন্তব্য করেন তিনি।
১৭. চীন:
চীন উভয় দেশকে শান্ত থাকার আহ্বান জানায়। তবে বিশেষভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্ঘাত থেকে নিবৃত থাকার আহ্বান জানায় দেশটি। বেইজিংয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র জেন শুয়াং বলেন, আমরা উভয় দেশকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাই।
১৮. ইসরাইল:
ইসরাইল সোলাইমানি হত্যাকাণ্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ অধিকার হিসেবে মন্তব্য করে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের রক্ষার অধিকার রয়েছে। একই সঙ্গে ইসরাইলেরও অধিকার রয়েছে নিজেদের রক্ষার।
১৯. ন্যাটো:
ন্যাটো সামরিক জোট সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন দিয়েছে। অবশ্য ন্যাটোর এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায় ইরান।

মন্তব্যসমূহ (৮)

  • Tamim ahmed

    4 years ago

    Best ob luck Iran.,✌?

  • Md .Habib

    4 years ago

    আমার বিশ্বাস ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ হলে ইনশাআল্লাহ ইরানের জয় নিশ্চিত। কারন, ইরানের মানুষ ইসলাম প্রিয়, আর যুক্তরাষ্ট্র তো সব খিস্টান ,তাই ৩য় বিশ্ব যুদ্ধে হলে মুসলিম রাষ্ট্রের বিজয় নিশ্চিত ‌। এতে কোন‌ই সন্দেহ নাই ইনশাআল্লাহ। কারন, একমাত্র ইসলামী যুদ্ধ হবে ইত্যাদি বিজয় ইনশাআল্লাহ। আল্লাহু আকবার

  • Md .Habib

    4 years ago

    Allah us help doing

  • Md .Habib

    4 years ago

    Allah us help doing

  • Md .Habib

    4 years ago

    Allah us help doing


Lost Password