ইতালি প্রবাসী পুত্রবধূর বিরুদ্ধে পরকীয়া, বিয়ে, অর্থ আত্মসাৎ এবং নানা অপকর্মের অভিযোগে কুমিল্লায় কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন শ্বশুর।
জেলার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউপির দক্ষিণ রাচিয়া গ্রামের মো. মুসলেম উদ্দিন পুত্র বধূ লিজার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। লিজার বাবা আবুল কালাম এবং মা হোসনেআরার বিরুদ্ধেও অভিযোগ করা হয়। তারা উপজেলার দূর্গাপুর ইউপির সাহেব নগর গ্রামের বাসিন্দা।
ইতালী থেকে মো. মুসলেম উদ্দিনের পুত্র রনি উদ্দিন ফোনে জানান, তার স্ত্রী লিজা একাধিক ছেলের সঙ্গে পরকীয়ায় আসক্ত। ইতালি গিয়ে অন্য পুরুষের সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা ও পরকীয়ায়সহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে লিজা। এছাড়াও আমাকে কোনো প্রকার তালাক না দিয়ে পর পর দুইটি বিয়ে করে। সম্পত্তি ক্রয়ের কথা বলে আমার কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে তার বাবার যোগসাজশে।
রনির বাবা মুসলেম উদ্দিন কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ করেন, ২০১১ সালের ২৮ জুলাই লিজার সঙ্গে পারিবারিকভাবে রনির বিয়ে হয়। রনি বিয়ের পর স্ত্রীকে রেখে পুনরায় ইতালিতের চলে যান। ২০১২ সালের ১৮ অক্টোবর রনি স্ত্রী লিজাকেও ইতালিতে নিয়ে যায়।
দাম্পত্য জীবনে সোহান উদ্দিন নামে তাদের একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। সন্তান জন্মের পর বছর খানিক তাদের দাম্পত্য জীবন সুখেই ছিল। এর মধ্যে লিজা সোহাগ নামে এক সহকর্মীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। পরকীয়া নিয়ে রনি ও লিজার মধ্যে কলহ ও বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরপর লিজা ছেলে সোহানকে স্বামীর কাছে রেখে ইতালিস্থ বাসায় থেকে চাকরি করেন।
পরবর্তীতে পরকীয়া প্রেমিকা দেওয়ান সোহাগ লিজাকে রেখে বাংলাদেশে এসে অপর একটি মেয়েকে বিয়ে করে ইতালিতে নিয়ে যায় এবং লিজাকে বাসা থেকে বের করে দেয়। এরপর থেকে লিজা রনির বিরুদ্ধে ইতালি কোর্টে নানা রকম মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির শুরু করে। এরমধ্যেই চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর লিজা বাংলাদেশে এসে পুরাতন প্রেমিক নুরুল আমিন নামে এক ইন্ডিয়া নাগরিককে বিয়ে করেছে।
এই অবৈধ বিয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় আসক্ত লিজার বাবা আবুল কালাম ও মা হোসনেআরা জড়িত। লিজা পরপর দুইটি বিয়ে করলেও রনিকে কোনো প্রকার তালাক নামা দেয়নি। ব্যক্তিগতভাবে পাঁচথুবি ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। এমনকি ইউপি চেয়ারম্যান আমাদের লিখিত ভাবেও ডির্ভোসের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।
মুসলেম উদ্দিন আরো জানান, ইতালি থাকা অবস্থায় বাবার এলাকায় সম্পত্তি ক্রয়ের কথা বলে লিজা ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিভিন্ন ভাবে রনির কাছ থেকে লিজা লাখ লাখ টাকা গোপন করেছে। তাছাড়া লিজা ইতালিতে গিয়ে বিভিন্ন প্রবাসী ছেলেদের সঙ্গে অবৈধ ও অনৈতিক সম্পর্ক করে অর্থ আত্মসাৎ করে প্রচুর সম্পদের মালিক হয়েছেন। ইতালিতে তার আয়ের সঙ্গে ব্যাংক ডিপোজিটের বিশাল ব্যবধান রয়েছে।
তিনি আরো জানান, লিজা তার শিশু সন্তানকে মারপিট করেছে। শিশুটিকে প্রচন্ড মারপিটসহ মাথার চুল উপড়ে ফেলা, পায়খানার রাস্তায় আঘাতসহ হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড করেছে। এছাড়াও তৃতীয় বিয়ের পর ইতালি গিয়ে ছেলে ও নাতিকে আরো হয়রানি করবে বলে হুমকি দিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে লিজা ও তার পরিবারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল হক জানান, মুসলেম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি এই ধরনের একটি অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ আমলে নিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন