সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের রফতানি বেড়েছে দ্বিগুণ। এতে যেমন বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ বেড়েছে তেমনি দেশে কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। বেড়েছে দেশীয় পণ্যের কদর।
তবে ভারত অংশে নিরাপত্তার নামে পণ্যবাহী ট্রাক তল্লাশি ও বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সীমান্তে বাণিজ্য তদারকিতে নিয়োজিতরা আন্তরিক হলেই বাণিজ্য আরও প্রসারিত হবে।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে রফতানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পাট ও পাট-জাতদ্রব্য, তৈরি পোশাক, মাছ, কেমিক্যাল, মেহেগনি ফল, গার্মেন্টস জুট (টুকরা কাপড়), চালের কুড়া, নারকেলের শলা, সাবান, টিস্যু পেপার ও প্লাস্টিকের ডাস্ট উল্লেখ্যযোগ্য।
ভারত, বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট এক্সপোর্ট সাব কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, দেশে স্থলপথে যে বাণিজ্য হয় তার ৭০ শতাংশ হয়ে থাকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রথম থেকে এ পথে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা রফতানি বাণিজ্যে দারুণ সম্ভাবনা দেখালেও ভারত অংশে নানান হয়রানিতে ব্যাহত হচ্ছে এ বাণিজ্যিক কার্যক্রম।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ভারতীয় পণ্যের রফতানি বাণিজ্যে ভারতীয়দের আগ্রহ বেশি থাকলেও বাংলাদেশি পণ্য আমদানিতে তাদের আগ্রহ কম। ভারত অংশে অবকাঠামো উন্নয়ন ও হয়রানি কমলে বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে।
আমদানি, রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে রফতানি বাণিজ্যে পরিবর্তন এসেছে। রফতানি বাড়ায় যেমন বৈদেশিক মুদ্রা আয় বেড়েছে তেমনি দেশে অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। অবহেলিত পণ্যের কদর বেড়েছে।
রফতানি পণ্য-বহনকারী বাংলাদেশি ট্রাক চালকেরা বলছেন, অভিযোগ থাকলে বিএসএফ ট্রাক তল্লাশি করবে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া সব ট্রাক দাঁড় করিয়ে তল্লাশিতে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। এতে রফতানি বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউজের সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা বলেন, আগে অবহেলা ছিল রফতানি বাণিজ্যে। বর্তমান কাস্টমস কমিশনারের হস্তক্ষেপে রফতানিতে গতি ফিরেছে। তবে ভারত অংশে হয়রানি বন্ধে আলোচনায় তারা সন্তোষজনক সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতি বছর প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা মূল্যের বাংলাদেশে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য ভারতে রফতানি হয়। ২০১৪- ১৫ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ৫ বছরে রফতানি হয়েছে ১৮ লাখ ৫১ হাজার ২৫৭ মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের পণ্য।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন