মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে শিশুর ‘লাশ নেই’!

মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে শিশুর ‘লাশ নেই’!

রাজধানীর মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানের নতুন কবর থেকে এক শিশু বাচ্চার লাশ চুরির অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জান্নাত নামে শিশুটির বাবা মিরপুর -১ নম্বরের বাসিন্দা মোঃ রুবেল এই অভিযোগ করেন। তবে প্রাথমিকভাবে পুলিশ বলছে, এটি ওয়ারিশ কুকুরের কাজ হতে পারে। তবুও পুরো ঘটনা বিশ্লেষণে তদন্ত চলছে।

শিশুর বাবা অভিযোগ করে বলেন, গত শনিবার দুপুরে অসুস্থতাজনিত কারনে জান্নাত নামে আমার ৩৩ দিন বয়সী মেয়ে বাচ্চার মৃত্যু হলে বাবু নামে একজন গোরখোদকের মাধ্যমে সেদিনই বিকালে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করি। এর চারদিন পর আজ মঙ্গলবার আমি আমার স্ত্রীসহ পুরো পরিবার নিয়ে কবরটি জিয়ারতে এসে দেখি কবরটি খোড়া এবং আশপাশে কাফনের কাপড় ও বাঁশ পড়ে আছে।

আমার সন্দেহ হচ্ছে, কবরের ভেতরে আমার শিশু বাচ্চাটির লাশ নেই। আমার স্ত্রীও হতাশায় ভেঙ্গে পড়ে চরম কান্নাকাটি করছে। আমি বিষয়টির সঠিক তদন্ত করে কবরে আমার শিশু বাচ্চাটির লাশ আছে কি না, তা জানতে স্থানীয় প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

শিশুটির বাবা ভুক্তভোগী রুবেল আরো বলেন, কবরস্থানে মৃতের লাশ দাফন করতে সরকারী ফি হিসেবে তারা আমার নিকট ১ হাজার সাত’শ টাকা দাবি করলে আমি গরীব মানুষ হিসেবে সাত’শ টাকা প্রদান করি। তবে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এই শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে দাফনকৃত লাশের অভিভাবকদেরকে প্রদানকৃত টাকার সমপরিমাণ একটি মানিরিসিট দেওয়া হয়। কিন্ত তারা আমাকে সেটিও দেয়নি।

কবরস্থানে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা সরকারি কোষাগারে এই টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করতেই আমাকে কোন রশিদ দেননি বলে আমি মনে করি। এখন কবরস্থানে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাগণ বলছেন, এটি কোনো বেওয়ারিশ কুকুরের কাণ্ড হতে পারে। এমন হৃদয়বিদারক পরিস্থিতিতে আমার স্ত্রী সেলিনা কাঁদতে কাঁদতে বার বার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। আমি নিজেও দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আমি দ্রুত এই ঘটনাটির তদন্ত করে ঘটনাটির স্বচ্ছতা সম্পর্কে জানতে চাই।

এ বিষয়ে কবরস্থানে ইনচার্জ সালাউদ্দিন মিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আমার একজন আত্মীয়ের মৃত্যুর ঘটনায় একটু বাইরে আছি। এই মূহুর্তে এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারছি না।

তবে লাশটি কবরের ভেতরে আছে কিনা তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো মন্তব্যও করতে পারছি না। তাছাড়া লাশটি কবরের ভেতরে না থাকলে সেটি কোনো বেওয়ারিশ কুকুরের কাজ হতে পারে বলে আমি মনে করি।

এ দিকে ঘটনার সংবাদ পেয়ে স্থানীয় দারুসসালাম থানা পুলিশের এসআই সুলতানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

এ বিষয়ে দারুসসালাম থানার এসআই সুলতান বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আসলে সবকিছু দেখে এই মূহুর্তে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না শিশুটির লাশ আসলেই কবর থেকে চুরি হয়েছে কিনা। তদন্ত চলছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password