ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে লাশ নিয়ে এসে পিতা হত্যার বিচার চাইলো মুক্তাগাছা উপজেলার ঘোগা ইউনিয়নের জামগড়া গ্রামের ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী আলতাব হোসেনের কিশোর ছেলে আরিফ হোসেন (১২) ও স্বজনরা।পুলিশি নির্যাতনে এ হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ স্বজনদের। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে লাশ রেখে এসব অভিযোগ করেন। এসময় তারা নির্যাতনকারী পুলিশের বিচার দাবি করেন।
নিহত আলতাব হোসেনের ছেলে আরিফ হোসেন অভিযোগ করেন, স্থানীয় বখাটে, জুয়াড়ি ও কঙ্কাল ব্যবসায়ী আজহার, সিরাজ ও সাইদুলের কথায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তাগাছা থানার এসআই খায়ের ও হামিদ তার পিতা আলতাব হোসেনকে ধরে নিয়ে যায়।
সে দাবি করে, পুলিশ তার বাবাকে স্থানীয় একটি জঙ্গলে নিয়ে গাছের ডাল দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এরপর চাচা ও তার স্ত্রীর কাছে ৮৫ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করে পুলিশ। হতদরিদ্র পরিবারটি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় মুক্তাগাছা থানায় ৩ দিন আটকে রেখে বেধড়ক পিটিয়ে ও অমানুষিক নির্যাতন করে শরীর থেঁতলে দেয়।
এরপর আলতাবকে ডলার প্রতারণা মামলায় জেল হাজতে প্রেরণ করলে গত ৫ মার্চ জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে। এরপর থেকে আলতাব অসুস্থ জীবনযাপন করে। কবিরাজিসহ স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করে।কিন্তু বুধবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার স্থানীয় একজনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা সুদে নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির উদ্দেশে রওনা হয়।
কিন্তু পথিমধ্যেই আলতাব মারা যায়। পরে তাকে মুক্তাগাছা একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ময়মনসিংহে পাঠিয়ে দেয়। পরে পরিবারের লোকজন লাশ নিয়ে পুলিশি বিচারের দাবিতে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেয়।
পুলিশি নির্যাতনে মারা যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে মুক্তাগাছা থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, আলতাব হোসেনের বিরুদ্ধে ডলার প্রতারণা ও কঙ্কাল চুরির অপরাধে নারায়ণগঞ্জে আড়াই হাজার থানায় একটি ও মুক্তাগাছায় ২টি মামলা রয়েছে।সম্প্রতি ত্রিশাল উপজেলার হাফিজুল নামে এক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে ডলার প্রতারণা মামলা করে। ওই মামলায় তাকে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা হয়। এরপর গত ৫ মার্চ আলতাব জামিনে আসে। এক সপ্তাহ বাড়িতে থাকার পর বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন