নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে সাংবাদিক নির্যাতনের মামলায় এজাহারভুক্ত চারজন আসামী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে বিচার জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। রোবাবার (১৩জুন) বিকেল ৩টার দিকে ২নং আমলী আদালত নওগাঁ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিকাশ কুমার বসাক এ নির্দেশ দেন।
আসামীরা হলেন- প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি এরশাদ আলী (৫০), সাধারন সম্পাদক বাবুল আক্তার(৪৫), সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন রানা (৩০) ও খাদেমুল ইসলাম (৫৫)। আসামীপক্ষের আইনজীবি ছিলেন- অ্যাডভোকেট হারুনুর রশীদ এবং রাষ্ট্রপক্ষের ছিলেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মামুনুর রশীদ।
পরবর্তী শুনানী হবে আগামী ০৯/০৮/২০২১ ইং। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের দাওইল গ্রামের তদন্তে প্রাপ্ত গ্রেফতার দলিল লেখক সমিতির সদস্য মিজানুর রহমান নামে একজনকে আটক করে পুলিশ রোববার দুপুরে জেল হাজতে পাঠায়। বর্তমানে পাঁচজন আসামী রয়েছে জেলহাজতে।
উল্লেখ্য, জেলার মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতি সাধারণ মানুষদের সাথে প্রতারণা করে দীর্ঘদিন থেকে অতিরিক্ত চাঁদা আদায় করে। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে হয়রানি শিকার ও জমি রেজিস্ট্রি বন্ধ করে দেন তারা।গত ৮জুন দৈনিক যুগান্তর ও জাগোনিউজের জেলা প্রতিনিধি আব্বাস আলীর বড় ভাই আসাদ আলী তার পারিবারিক জমি রেজিস্ট্রি করতে প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতিতে যান।
সেখানে দলিল লেখকের সাধারন সম্পাদকের বাবুল আক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে একটি দলিল ১২ লাখ টাকা মূল্যে করতে চান। যেখানে ১০ দশমিক ৫ টাকা হারে ১২ লাখ টাকার দলিলে ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা খরচ হবে বলে জানানো হয়। যা সরকারি মূল্যের চাইতে অতিরিক্ত চাঁদা দাবী করা হয়।
বিষয়টি আসাদ আলী তার ছোট ভাই সাংবাদিক আব্বাস আলীকে জানালে তিনি স্বশরীরে সাধারন সম্পাদক বাবুল আক্তারের সঙ্গে দেখা করে খরচ কিছু করার অনুরোধ জানান। কোন কম হবে না বলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন। দলিল রেজিস্ট্রিতে সরকারি খরচের বিষয় জানতে চাইলে তারা আব্বাস আলীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারমুখী আচরণ করে দলিল লেখক সমিতি চত্বর থেকে বের করে দেয়। পরে তিনি বিষয়টি সাব-রেজিস্ট্রিারের সঙ্গে আলোচনা করতে তার এজলাস কক্ষে যান।
এসময় দলিল লেখক সমিতির সাধারন সম্পাদক বাবুল আক্তার ও সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন রানার নেতৃত্বে ১০-১২ জন এজলাস কক্ষ থেকে টেনে হিচড়ে বের করে বারান্দায় শরীরের বিভিন্নস্থানে কিলঘুষি মেরে আহত করে কাছে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। যার মধ্য জমি রেজিস্ট্রি বাবদ নগদ তিন লক্ষ টাকা, ভিডিও ক্যামেরা ও একটি ল্যাপটপ ছিল। পরে কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়।
ঘটনায় ভুক্তভোগী আব্বাস আলী বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন