প্রতিটি মানুষের একটা প্রধান লক্ষ্য হল তার সফলতা অর্জন করা।আমাদের জীবনের সব কষ্ট ও পরিশ্রম এই একমাত্র সফলতার জন্য।আমাদের জীবনে কিছু বিষয় এড়িয়ে চললে এবং নিজের লক্ষ্য ঠিক করে সে অনুসারে যদি চেষ্টা করা হয় তাহলে জীবনে সফলতা লাভ করাটা কোন কঠিন কিছু না।
আপনি জীবনে সফল হতে চান? তার উত্তরগুলো কিন্তু খুব সহজ! যে কোন একটি কাজ শুরু করলে এর মধ্যে কিছু ভুল হতেই পারে,তাই হতাশ হয়ে পড়া উচিৎ নয় কোনভাবেই। সেই কাজটিকে বারবার চেষ্টা করতে হবে এক দিন সফলতা আসবেই। সফলতা পেতে হলে কিছু গুণাবলি অবশ্যই অর্জন করতে হয়।
আমরা সবাই জানি একটি বিখ্যাত লাইন তা হলো - কোন কাজ একবারে না পারিলে দেখো শতবার । নিজের প্রতিভা বা মেধার কথা বলে বা তাকে দোহাই দিয়ে আসলে জীবনে তেমন কিছু হয় না। ইতিহাসের স্মরণীয় ও বিখ্যঅত মনিষীরা সবাই একজন সাধারন মানুষ এবং এ পৃথিবীতেই তাদের জন্ম । প্রতিটি সফল মানুষের কিছু কাজ অনুকরণীয় এবং তাদেরকে সাফ্যলের চূড়ায় পৌঁছে দিতে তাদের কিছু নিজস্ব ৭টি পদক্ষেপ ছিল যা আমাদের জনা উচিত এবং সফল হতে চাইলে তা পালন করা উচিত
। ১) খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠাঃ- এই কথাটি আমরা সবাই জানি । কিন্তু এ ডিজিটাল যুগে অনেকেই আমরা এটি অনুসরণ করিনা । ভোরে ঘুম থেকে উঠলে কাজের জন্য অনেক সময় বেশি পাওয়া যায়। এ ছাড়া সকালে প্রতিটি কাজের গতি বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যখন কোনো মানুষ ভোরে ওঠেন, তখন অন্যদের তুলনায় তিনি বেশ ও বেশি সক্রিয় থাকেন এবং কাজের সময় নেন কম কার সে সক্রিয়। সকালে উঠলে মানসিক চাপ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। সকালে ঘুম থেকে ওঠা মানে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া। কিন্তু সবাই তা অনুসরন করতে পারিনা আবার কিছু ব্যতিক্রম হতে পারে ।
২) নিজের জীবনের জন্য যথাযথ পরিকল্পনা করাঃ একটি যথাযথ পরিকল্পনা একজন মানুষকে অনেকখানি সফল হতে সহযোগিতা করে । সুন্দর ও যথাযথ পরিকল্পনা ছাড়া একজন মানুষ সহজে সফলতা অর্জন করতে পারেনা । আজগুবি ও অবাস্তব পরিকল্পনা গ্রহন করলে হবেনা । যত বাস্তব ও যথাযথ পরিকল্পনা তত সফলতা ।
৩) নিজের বর্তমান অবস্থান নিয়ে চিন্তা করাঃ এটি একটি বড় বাস্ত সত্য যে, সব সময় বর্তমান ও নিজের বাস্তব অবস্থান কে নিয়ে চিন্তা করতে হবে। অতীত নিয়ে চিন্তা করা যাবেনা তা বলিনা কিন্তু নেতিবাচক অতীত নিয়ে চিন্তা করে সময় নষ্ট করার কোন মানে হয়না । অতীত কে ভেবে বর্তমান জীবনের গতিকে থেমে রাখলে জীবনে কখনো সামনে এগিয়ে যেতে পারবেনা বর্তমান কে নিয়ে ভাবতে হবে এবং কোথায় আছি, কি আমার অবস্থান তা চিন্তা করে ও তাকে ব্যাস করে নিজের উপর ভরসা রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে দেখবে একসময় সত্যি সত্যিই সফলতার মূখ দেখতে পারবে এবং এটা নিশ্চিত ।
৪) প্রয়োজনীয় শরীর চর্চা করাঃ যখন থেকে বই পড়া শিখেছি তখন থেকেই জানি, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। শরীর ঠিক তো সব কিছুই ঠিক। নিজের শরীর সুস্থ্য থাকলে সব কিছুই ভালো লাগে।শরীর সুস্থ্য রাখার জন্য আমরা অনেক কিছুই করি। শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত পুষ্টিকর খাবারের সাথে সাথে শরীর চর্চা অর্থাৎ ব্যায়াম করার গুরুত্ব অপরিসীম।শরীর সুস্থ্য থাকলে সুস্থ্য থাকে আমাদের মন এবং মন সুস্থ্য থাকলে সকল কাজে মনযোগ দেয়া সম্ভব হয়। এজন্যই সফল মানুষ হতে হলে প্রতিদিন ব্যায়াম বা শরীল চর্চা করা আবশ্যক সকলের জন্য ।
৫) চ্যালেঞ্জ বা ঝুঁকি গ্রহণ করতে প্রস্তোত থাকতে হবেঃ চ্যালেঞ্জ বা ঝুঁকি হলো এক ধরনের বড় দায়িত্ব, ভার বা একধরনের সমস্যার সম্ভাবনা। ঝুঁকি হলো মূল্যবান কোন কিছু অর্জন বা হারানোর সম্ভাবনা বা এক ধরনের অনিশ্চয়তা । ঝুঁকি হলো অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও গৃহীত পদক্ষেপের একটি বড় ফল বা রেজাল্ট। আপনি যদি সফল হতে চান তাহলে ঝুকি নিতে হবে। ব্যর্থ হওয়ার ভয়ে ঝুঁকি গ্রহণ থেকে বিরত থাকা উচিত হবে না।আপনি যদি সফল হতে চান তবে অব্যশই আপনাকে যে কোন ভাবে ঝুঁকি গ্রহণ করতে হবে।
৬) ইতিবাচক মানসিকতা ও চিন্তা করাঃ সবসময়ই ইতিবাচক চিন্তা একটা বড় শক্তি । আপনি যদি নিজের সফলতা অর্জন করতে চান, তবে আপনাকে প্রথমে বিশ্বাস করতে হবে যে আপনি তা অর্জন করতে অবশ্যই পারবেন। আপনি যদি বিশ্বাস করেন যে, আপনি তা পারবেন তহলে বার বার ব্যর্থ হওয়ার পরও আপনি হাল ছাড়বেন না যা আপনাকে সফল হতে বাধ্য । কোনভাবেই নিজের উপর বিশ্বাস হারানো যাবে না। সব সময়ে ইতিবাচক চিন্তা থাকতে হবে যে আপনার দ্বারা তা সম্ভব।
৭) পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতিঃ সবাই জানি আমরা, জীবনে সফলতা অর্জনের পিছনে যেটা সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন তা হলো পরিশ্রম। এই পরিশ্রমের বিকল্প নেই। এমনি এমনি জীবনে সফলতা আসেনা । পৃথিবীতে তা কেউ দেখাতে পারবেনা । বা সফলতা নিয়ে কেউ জন্মলাভ করে না। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সবকিছু অর্জন করতে হয়।
এই প্রবাদ আমরা সবাই জানিযে, ‘পরিশ্রম সাফল্যের চাবিকাঠি’।পরিশ্রমের দ্বারা ভাগ্যের চাকা এমনভাবে পরিবর্তন করা সম্ভব। সফলতার প্রথম শর্ত হল প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও কঠোর পরিশ্রম। সাফল্যের পেছনে লুকিয়ে থাকে কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়। আধুনিক এই বিজ্ঞান বিশ্বে যা কিছু আবিষ্কার হয়েছে সবই পরিশ্রমের ফসল।
জীবনের সফলতা আনতে হলে নিজের ইচ্ছা শক্তি, আত্নবিশ্বাস ও পরিশ্রমকে মূল চাবিকাঠি হিসাবে নিতে হবে ও অনুশীলন করতে হবে তবেই যে কেউ সফলতার আলো দেখতে পাবে ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন