রাখিলেন সাঁই কূপজল করে/ আন্দেলা পুকুরে, কবে হবে সজল বরষা/ চেয়ে আছি সেই ভরসা…' গানের সাথে আন্দোলিত হয়ে উঠল ভক্তরা।
গাছে গাছে পাখির কিচিরমিচির। চারপাশে রোদের ভেতর ছায়াঘেরা জায়গাটি শরীরে শীতল পরশ বুলিয়ে দেয়। পথের ক্লান্তি নিমেষে উধাও। ছায়া-ঢাকা পাখি-ডাকা সবুজ, সুনসান নীরব, বিরাট এক বটগাছ ঘিরে বৃত্তাকার বসার জায়গা, পাশেই বড় খোলা মাঠ পেরিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতী নদী, একপাশে কাঠের দোতলা বাড়ি, ঝুল বারান্দা থেকে কৃষ্ণচূড়া গাছ, নদীর পাড়ে খোলা সবুজ মাঠে অলস সময় পার- সব মিলিয়ে মন ভালো করা পরিবেশ।
জায়গাটি হলো মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ইছামতি নদীর পাড়ে ছোট্ট দোসরপাড়া গ্রামে অবস্থান অনন্য একটি নাম পদ্মহেম ধাম।
ইছামতী নদী ঠিক এই জায়গাটিতে এসেই তিন দিকে তিনটি বাক নিয়ে তৈরি করেছে এক চমৎকার মোহনা,এই চমৎকার মোহনার পাশে মাঠ,সে মাঠের পাশেই এক চিলতে জায়গা।এক চিলতে জায়গা না বলে এক চিলতে সুখ ও বলা যেতে পারে,যেখানে প্রকৃতি প্রেমীরা,মানবপ্রেমীরা আসেন সময় কাটাতে।জায়গাটির নাম পদ্মহেম ধাম,লালনসাই আখড়া।তবে স্থানীয় অনেকে এটাকে বাউল বাড়ি হিসেবেই বেশি চেনেন।আখড়াটির অবস্থান মুন্সিগঞ্জ জেলার, সিরাজদিখান উপজেলার, দোসর পাড়া গ্রামে।লালনসাই এর আখড়া হলেও,এখানে কখনো সাঁইজির পদার্পণ পরে নি।কিন্তু তিনি না আসলেও আমরা জানি যে,তার দর্শন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন জেলায়।সে ভালোবাসায়ই জর্জোরিত ব্যাক্তিদের মধ্যে একজন হচ্ছেন প্রথম আলো পত্রিকার আলোকচিত্রকর সাংবাদিক কবির হোসেন।
এই মানবধর্ম প্রেমীর দাদাবাড়ি হচ্ছে মুন্সিগঞ্জ।মানবধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে, তারই উদ্যেগে এখানে গড়ে উঠেছে লালন প্রেমের আখড়া। প্রতিবছর এখানে সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠিত হয়। নদীর ধারে খোলা মাঠে লালনবাণী শুনতে দেশের নানা প্রান্তের লালনভক্তরা হাজির হন এখানে।
লালন প্রেমচর্চার এই জায়গাটির আরো শোভা বাড়িয়েছে বিক্রমপুর তথা মুন্সিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী দোতালা ঘরের একটি বৈঠকখানা,একটি বটতলা ও লালন প্রেমীর প্রতীকস্বরূপ বিশাল আকৃতির একটি একতারা গেইট,একতারাটি “সাধুসঙ্গ ১৪২১” উপলক্ষ্যে বটতলা লালন সাই সড়কে উদ্ভোদন করা হয় ।এছাড়াও আখড়ার চারপাশের পরিবেশ গাছাগাছালির ছায়ায় ঢাকা, যা এক প্রকার মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন