বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে জমি জবরদখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ এনে ওই জমি দখলমুক্ত করার দাবিতে জায়নামাজ বিছিয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন এক বৃদ্ধ। বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) বেলা ১১টায় বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অনশনে বসেন তিনি। অনশনে বসা বৃদ্ধের নাম বেলায়েত হোসেন।
তিনি পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের পূর্ব লেমুয়া গ্রামের বাসিন্দা। বেলায়েত হোসেনের অভিযোগ, কাকচিড়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির সামনে কাকচিড়া-লেমুয়া সড়কের দক্ষিণ পাশে তার পৈতৃকসূত্রে প্রাপ্ত জমি দখলে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করছেন বরগুনা-২ আসনের এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন। কাজ শুরুর পর তিনি এমপি রিমনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো ফল হয়নি।
পরে পাথরঘাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্ত কোনো সমাধান হয়নি। নিরুপায় হয়ে আজ তিনি জমিতে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ ও দখলমুক্ত করার দাবিতে অনশনে বসেন। জমির দলিলপত্র দেখিয়ে বেলায়েত হোসেন বলেন, বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার লেমুয়া মৌজার জেএল নং-০৪, এসএ খতিয়ান নং- ৫৪০/১১৬১ দাগ নং- ৩১৭০ এর ৩.৫০ শতাংশ জমি নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে বন্টন মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
ওই মামলায় সম্প্রতি জমিতে স্থিতাবস্থা জারি করে আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। কিন্ত আদালতের আদেশ অমান্য করে গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন ও তার অনুসারী কাকচিড়ার বাসিন্দা মাহবুব দালালকে দিয়ে ওই জমিতে মাটি কাটার কাজ শুরু করেন। তিনি এতে বাধা দেওয়ার পর বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার কথা হয়।
কিন্ত গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টার দিকে তিনি তার জমিতে গিয়ে দেখতে পান, সেখানে স্থাপনা নির্মাণের কাজ করছেন। পরের দিন ২৮ ফেব্রুয়ারি পাথরঘাটা থানায় জমি দখলের বিষয়টি উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ করেন। এর মধ্যে বেলায়েত হোসেনের ভাই অসুস্থ্য হওয়ায় তাকে চিকিৎসার জন্য বরিশাল নিয়ে যান। ফিরে এসে গতকাল বুধবার দেখতে পান ওই জমিতে স্থাপনা নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এমপি রিমন।
নিরুপায় হয়ে তাই অনশনে বসেছেন। বেলায়েত আরও বলেন, আমার বয়স ৬৫ বছর। আমি এ জমির বন্টন নিয়ে মামলা চালাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছি। এখন জমিটুকু ছাড়া কোনো সম্বল নেই। আমি আমার জমি বুঝে পেতে সবার সহযোগিতা চাই। জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানের সরকারি মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন বলেন, বেলায়েত হোসেনের দাবিকৃত খতিয়ানের ৩১৭০ দাগে আমি কাজ করছি না। ৩১৭১ দাগে আমার ৫ শতাংশ জমি কেনা আছে। ওই জমিতে আমি কাজ করছি। অনশনের বিষয়টি পুরোপুরি ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’। আমি সব কাগজ জেলা প্রশাসক ও পাথরঘাটা থানায় দিয়েছি। বরগুনার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক বলেন, আমি বৃদ্ধের অভিযোগের কথা শুনেছি এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে জেনে ব্যবস্থা নেব।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন