নিউ ইয়র্ক: 'বাংলাদেশ মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার নীতিসমূহের প্রতি গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যার প্রতিফলন দেখা যায় জাতিসংঘের মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাসমূহের সাথে আমাদের বিদ্যমান নিবিড় সম্পৃক্ততার মাধ্যমে'। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মানবাধিকার কাউন্সিলের রিপোর্টের উপর আয়োজিত এক সাধারণ বিতর্কে বক্তব্য প্রদানকালে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ কাউন্সিলের দায়িত্ব ও কাজে সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত ও সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ'। মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে সর্বোচ্চ প্রাধিকারভূক্ত এজেন্ডায় রাখা এবং কাউন্সিলের ৪৭তম সেশনে সর্বসম্মতিক্রমে এ বিষয়ক একটি রেজুলেশন গ্রহণ করার জন্য মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
মিয়ানমারে নিযুক্ত বিশেষ র্যাপোটিয়ার ও স্বাধীন তদন্ত ব্যবস্থার কাজ এবং ভূমিকারও প্রশংসা করেন তিনি। রাষ্ট্রদূত ফাতিমা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বপ্রণোদিত ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করা এবং মিয়ানমারে তাদের নিজভূমিকে বৈষম্য ও নিপীড়নমুক্ত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ অব্যাহত রাখতে কাউন্সিলের প্রতি আহ্বান জানান। মানবাধিকার কাউন্সিল গৃহীত রেজুলেশনে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ন্যায়সঙ্গত, সাশ্রয়ী, সময়োপযোগী এবং বৈশ্বিক প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করে রেজুলেশনটিকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
কোভিড-১৯ সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান অসমতাসহ এর আর্থ-সামাজিক প্রভাব মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণার্থে কাউন্সিলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। দক্ষিণের উন্নয়নশীল দেশসমূহ কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিনে ন্যায়সঙ্গত ও সময়োপযোগী প্রবেশাধিকার পাচ্ছেনা মর্মে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। এ প্রসঙ্গে অভিবাসীদের প্রতি সকল ধরণের বৈষম্য বিলোপ ও তাদের কোভিড ভ্যাক্সিনের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার উপর জোর দেন তিনি। রাষ্ট্রদূত ফাতিমা জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবাধিকার সংক্রান্ত রেজুলেশন গ্রহণকে স্বাগত জানান।
জলবায়ুজনিত বাস্তুচ্যুতির দিকে বাড়তি মনোযোগ দিতে কাউন্সিলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি, যা বাংলাদেশসহ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। নারী ও শিশুদের উপর কোভিডের অসাঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাবের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, “আমরা উদ্বিগ্ন যে অনেক উন্নয়নশীল দেশে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে ঝরে পড়ার হার বেড়েছে, এবং মেয়েরা বাল্যবিবাহ, সহিংসতা ও নির্যাতনের উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে”। অতিমারির প্রভাব মোকাবিলা করে লিঙ্গসমতা ও নারীর ক্ষমতায়নের অগ্রগতি সাধনে কাউন্সিল যাতে নতুন করে মযোযোগ দেয় সেবিষয়ে আহ্বান জানান তিনি।
কাউন্সিল গৃহীত কর্মপ্রক্রিয়া এবং সদস্যরাষ্ট্রসমূহের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি এবং সহযোগিতামূলক মনোভাবের মাধ্যমে মানবাধিকার সমুন্নত রাখার বিষয়টি এগিয়ে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মানবাধিকার কাউন্সিলের সভাপতি রাষ্ট্রদূত নাজহাত শামীম খান এ রিপোর্ট উপস্থাপন করেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন