বরগুনায় এক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে জমি জবরদখলের অভিযোগে আমরণ অনশনে বসা বৃদ্ধ বেলায়েত হোসেন অনশন ভেঙেছেন। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসে পুলিশ সুপারের দেয়া পানি ও খাবার খেয়ে অনশন ভাঙেন তিনি। পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া এলাকায় জমি দখলমুক্ত করার দাবিতে বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশনে বসা বেলায়েত হোসেন অনশন ভেঙেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ ) রাত ১১টার দিকে ১৫ ঘন্টার মাথায় আগামী রোববার জমির দলিল দেখে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশ্বাসে অনশন ভাঙেন বেলায়েত। এ সময় পুলিশ সুপার নিজ হাতে খাবার খাওয়া ও আর্থিক সহায়তার সঙ্গে তার রাতে আবাসিক হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করেন। সকালে বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে তিনি জায়নামাজ বিছিয়ে অনশনে বসেন বেলায়েত হোসেন।
বেলা ১টার দিকে একজন ব্যক্তি সেখানে এসে ব্যানার ছিড়ে তাকে অপদস্ত করে অনশন থেকে তাকে উঠয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন বলেও জানিয়েছেন ওই বৃদ্ধ। বেলায়েত হোসেন পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের পূর্ব লেমুয়া গ্রামের বাসিন্দা। বেলায়েত হোসেন অভিযোগ করেন, পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির সামনে কাকচিড়া-লেমুয়া সড়কের দক্ষিণ পাশে তার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমি দখলে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করছেন বরগুনা-২ আসনের সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান রিমন।
তিনি আরো বলেন, আমি অসুস্থ আমার গায়ে প্রচুর জ্বর এসেছে। রাতে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গির মল্লিক এসে আমাকে আর্থিক সহযোগিতা ও রাতে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে জমি বুঝিয়ে দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন। আমি পুলিশ সুপার স্যারের কথায় আশ্বস্ত হয়ে অনশন থেকে সরে আসি। আশা করি প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমার জমি আমাকে বুঝিয়ে দেয়া হবে। তিনি রোববার আমাকে সব কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলেছেন ৷ আমি কাগজপত্র নিয়ে এসপি স্যারের সঙ্গে দেখা করব।
জমি দখলের বিষয় বৃহস্পতিবার বিকেলে জানতে চাইলে সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান রিমন বলেন, বেলায়েত হোসেনের যেসব অভিযোগ করেছেন তার কোনো ভিত্তি নেই। ২৫ বছর যাবত এই জমি আমি ভোগ দখল করি। কোন দিন আমি শুনিনি যে এই জমির মালিক বেলায়েত। আমি কেন তার জমি দখল করতে যাবো? তিনি থানায় অভিযোগ করেছেন। আমিও আমার কাগজপত্র থানায় এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। কিন্তু বেলায়েত হোসেন তো তার কোনো কাগজপত্র থানায় দিচ্ছে না।
অনশনের বিষয়টি পুরোপুরি ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’। অনশন ভাঙাতে এসে বরগুনা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক বলেন, অনশন ভাঙানোর পাশাপাশি সাধ্যমতো তাকে সহায়তার চেষ্টা করেছি। তাকে কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলেছি। কাগজপত্র দেখে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন