ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় ছোট বোনের বিয়ের দাওয়াতে যেতে না পারায় স্বামীর ওপর অভিমান করে এক গৃহবধূ বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার রাতে উপজেলার দুল্লা ইউনিয়নের চানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দাম্পত্য কলহের জের ধরে স্বামীর ওপর অভিমান করে ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। তবে নিহতের পরিবারের দাবি, তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে।
নিহত গৃহবধূর নাম মার্জিয়া সুলতানা তমা (১৯)। তিনি উপজেলার চারিপাড়া গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে। স্বামী জহুরুল ইসলাম (২৬) ওই গ্রামের মো. নরুল ইসলামের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মুক্তাগাছা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) চাঁদ মিয়া। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার নিহতের ছোট বোন তামান্না আক্তারের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। ছোট মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে বাবা আবু তাহের (৪৫) তমা ও তার জামাইকে দাওয়াত দিয়ে নিতে যায়।
তমাকে দাওয়াতে যেতে দেওয়া হবে না বলে শ্বশুরকে অপমান করে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেন জহুরুল। পরে স্বামীর ওপর অভিমান করে ঘর থাকা বিষপান করে আত্মহত্যা করেন তমা। এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নেয়ার কিছুক্ষণ পরই কর্তব্যরত চিকিৎসক তমাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। নিহতের বাবা আবু তাহের (৪৫) বাদী হয়ে থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা দায়ের করলে পুলিশ স্বামী জহুরুল ইসলামকে আটক করে।
নিহতের মা রিনা আক্তার সাংবাদিককে জানান, গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ জহুরুলের সঙ্গে আমার মেয়ে তমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আমার মেয়েকে ওরা মাইরা ফালাইছে। আমার মেয়ের মৃত্যুর আসল রহস্য জানতে চাই আমি। প্রতিবেশী মুক্তার আলী সাংবাদিককে জানান, কয় মাস হলো তাদের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর থেকেই তাদের পারিবারিক কলহ লেগেই ছিল।
সন্ধ্যায় পর শুনলাম তমা মারা গেছে। তার মৃত্যুটা আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। বিষপান করলে তো মুখে গন্ধ থাকবে। তার মুখ থেকে কোনো গন্ধ পাইনি। এদিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত মেডিকেল অফিসার ডা. আশিকুর রহমান সাংবাদিককে বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার কিছুক্ষণ পর রোগী মারা যায়। পরিবারের তরফ থেকে আমাদের মৃত্যুর কোনো কারণ জানাতে পারেনি। তবে বিষপান করার কোনো আলামত প্রাথমিকভাবে আমরা পাইনি।
লাশ ফরেনসিক বিভাগে পাঠালে মৃত্যুর আসল রহস্য জানা যাবে। মৃত্যু প্রসঙ্গে থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) চাঁদ মিয়া সাংবাদিককে জানান, ধারণা করা হচ্ছে, বোনের বিয়েতে না যেতে পেরে স্বামীর ওপর অভিমান করে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে। নিহতের বাবা বাদী হয়ে আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা করেছে। আমরা আসামিকে গ্রেফতার করেছি। লাশ ময়মনসিংহ কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন