বরগুনার আমতলীতে ধারের ১০ কেজি চাল ফেরৎ চাওয়ায় মোঃ নুরুল ইসলাম মুন্সীকে (৪৫) চাকু মেরে খুন করেছে চাচাতো ভাইয়ের ছেলে সাগর। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় ৩ জনকে আটক করেছে আমতলী থানা পুলিশ।
পুলিশ ও স্থাণীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের সেকান্দারখালী (চাঘাট) এলাকায় ভিকটিম নুরুল ইসলামের স্ত্রী রাণী বেগমের কাছ থেকে ১ বছর পূর্বে ১০ কেজি চাল ধার নিয়েছিল একই বাড়ীর ছোট চাচি বাদশা মুন্সীর স্ত্রী আলেয়া বেগম। ওই চাল দিবো দিবো বলে আর ফেরৎ দেয়নি চাচি আলেয়া বেগম।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ভিকটিমের ভাই হাসান মুন্সীর মুরগীর ফার্মের সামনে গিয়ে চাচি আলেয়া বেগম বাড়ীর জমি-জমার কাগজপত্র চায় ভিকটিম নুরুল ইসলাম মুন্সীর কাছে। এ সময় ভিকটিম নুরুল ইসলামের স্ত্রী রানী বেগম চাচি আলেয়ার কাছে তার ধার দেওয়া ১০ কেজি চাল ফেরৎ চায়। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে চাচি আলেয়া বেগম তার পড়নে থাকা কাপড়টি খুলে ঘটনাস্থলে রেখে তার বাড়ীতে চলে যায়। ধার দেওয়া চাল ফেরৎ দিতে না পারায় ভিকটিম নুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী চাচী আলেয়া বেগমের পড়নের কাপড় খুলে নিয়েছে বলে পুত্র আলমগীর প্রকাশ আলানুর (৪০), কন্যা খালেদা বেগম (৪৫) ও নাতি সাগরকে (১৯) জানায়। এসময় ঘটনা শুনে তারা উত্তেজিত হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমের সাথে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে চাচাতো ভাই আলমগীর প্রকাশ আলানুরের পুত্র সাগর তার হাতে থাকা চাকু দিয়ে ভিকটিম চাচা নুরুল ইসলাম মুন্সীর পিঠের ডানপাশে আঘাত করে। এতে সে গুরুত্বর আঘাতপ্রাপ্ত হলে দ্রæত স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন।
এ ঘটনায় আমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য থানায় নিয়ে এসেছে। ওই ঘটনায় জড়িত থাকায় পুলিশ চাচাতো ভাই আলমগীর প্রকাশ আলানুর, বোন খালেদা বেগম ও চাচী আলেয়া বেগমকে আটক করেছে। তবে মূলঘাতক সাগরকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি।
ভিকটিম নুরুল ইসলাম মুন্সীর ভাই হাসান মুন্সী বলেন, আজ সকালে আমার ভাইয়ের স্ত্রী রিনা বেগম চাচী (আলেয়া বেগম) কাছে ধার নেওয়া চাল ফেরৎ চইলে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি তার ছেলে আলানুর, নাতি সাগর মুন্সী ও কন্যা খালেদাকে পাঠিয়ে দেয়। তারা এসে আমার ভাইকে চাকু মেরে খুন করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
ভিকটিম নুরুল ইসলাম মুন্সির স্ত্রী রিনা বেগম বলেন, আলানুর বগি নিয়ে আমার স্বামীকে মারতে আসে। আমি ওই বগী তার হাত থেকে টেনে নেই। কিন্তু তার ছেলে সাগর মুন্সি ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে আমার স্বামীর পিঠে ছুরি ঢুকিয়ে হত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ হিমাদ্রী রায় মুঠোফোনে বলেন, নিহত নুরুল ইসলাম মুন্সির পিঠের ডানপাশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
আমতলী থানার পরিদর্শক (ওসি) মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, ধারের চাল ফেরৎ চাওয়াকে কেন্দ্র করে নুরুল ইসলাম মুন্সী নামে একজন খুন হয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন। জড়িত থাকার সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। মূলঘাতক সাগর মুন্সীকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন