টাকা নেই, তাতে কী? টাকা ছাড়াই, কোটি কোটি টাকার গাড়ি, এসি, দামি ফার্নিচার, মোবাইল, ল্যাপটপ সবকিছু অনায়াসে কিনতে পারেন ইসাহাক আলী। নিজেকে পরিচয় দেন কখনও পত্রিকার সম্পাদক, কখনও বা এনজিওর চেয়ারম্যান হিসেবে। ইসাহাকের এমন অভিনব প্রতারণার জালে আটকা পড়ে গ্রামীণফোন, সিম্ফনি, হাতিল, অটবির মতো করপোরেট প্রতিষ্ঠানও। দ্যা ডেইলি মর্নিং এক্সপ্রেস।
তিন বছরে ছাপা হয়েছে মাত্র একটি সংখ্যা। এটি দেখিয়ে কথিত সম্পাদক ইসাহাক আলী প্রথমে একটি আলিশান অফিস নেন মতিঝিলে। এজন্য বিনিয়োগ করতে হয়নি একটি টাকাও। এলিট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড মাসুম বেপারী ব্যবস্থাপক (সম্পদ) জানালেন, ভুয়া চেক দিয়ে স্পেসটি ভাড়া নিয়েছেন ইসাহাক। এরপরই শুরু হয়, একের পর এক প্রতারণা। এই অফিস দেখিয়ে নিয়োগ দেয়া হয় জেলা প্রতিনিধি। দেয়া হয় একটি করে নামি-দামি গাড়িও।
ভুক্তভোগী এক সাংবাদিক জানালেন, তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা জামানত নিয়ে দেয়া হয় একটি গাড়ি। তবে ওই গাড়ির মালিক ইসাহাক নন, অন্য এক ব্যক্তি। আসল মালিক শেখ মাসুদ হোসেন জানালেন, গাড়ি ভাড়ার টাকা দূরে থাক, সোয়া কোটি টাকার ৫টি গাড়ি উদ্ধার করতেই হিমশিম খেতে হয়েছে তাকে। মাসুদ হোসেন জানান, পাঁচটি গাড়ির চারটি উদ্ধার করতে পারলেও একটি গাড়ি এখনও উদ্ধার করতে পারেননি তিনি।
গাড়িটি এখন যার কাছে আছে, তার দাবি ইসাহাক জামানতের টাকা ফেরত না দিলে গাড়ি ফেরত দেবেন না তিনি। শুধু গাড়ি নয়, মতিঝিলের ওই অফিস দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় কোটি কোটি টাকার মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, এসিসহ নানান পণ্য। এডিসন গ্রুপের আইন উপদেষ্টা জয়ন্ত কর্মকার জানান, ২৩৫০ পিস মোবাইলের রিকোয়ারমেন্ট দিয়ে চিঠি পাঠানো হয় তাদের কাছে। তবে তারা ইসাহাকের দেয়া অ্যাকাউন্ট নাম্বার চেক করে দেখতে পান, তার অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা কখনোই ছিল না। ভাড়া নেয়া একটি গাড়ি শো-রুমে বিক্রি করতে এসে ধরা পড়েন ইসাহাক আলী।
আর গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে তার প্রতারণার ফিরিস্তি দিয়ে অনেকেই অভিযোগ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তেজগাঁও মডেল থানার ওসি অপূর্ব হাসান। প্রসঙ্গত, এর আগে ইসাহাক আলী একাধিকবার গ্রেফতার হলেও বার বার বেরিয়ে গেছেন আইনের ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন যমুনা টেলিভিশনের পর্দায়, আজ রাত ৯টায় ‘ইনভেস্টিগেশন থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি’তে।
সূত্রঃ যমুনা টিভি
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন