রাজধানীতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে জামায়াতে ইসলামী আগামীকাল ২৫ ফেব্রুয়ারি। কর্মসূচি সফল করতে ও সার্বিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে নূরুল ইসলাম বলেন, 'বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। জনগণের অধিকার ও দাবি আদায়ে আমরা সবসময় সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছি। আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান ও ওলামায়ে কেরামসহ সকল নেতাকর্মীর মুক্তি এবং কেয়ারটেকার সরকারসহ জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আগামীকাল ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেট থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি রয়েছে।'
তিনি আরো বলেন, 'আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ফলে বিক্ষোভ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ-ডিএমপির ই-মেইলে আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়াও ২০ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের প্রতিনিধি দল ডিএমপি কার্যালয়ে সরাসরি সাক্ষাৎ করে একই বিষয়ে আবেদন জমা দিয়েছেন ও কমিশনার অফিসের কর্মরত অফিসার সেটি রিসিভও করেছেন। অথচ পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রত্যুত্তর পাওয়া যায়নি।'
৩০ ডিসেম্বর ২০২২ গণমিছিল বাস্তবায়নের জন্য ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের পক্ষ থেকে ২৫ ডিসেম্বর ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর ই-মেইলে আবেদন পাঠানো হয়েছিল' জানিয়ে তিনি বলেন, 'এবং ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ জামায়াতের একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কার্যালয়ে সরাসরি সাক্ষাৎ করে একই বিষয়ে আবেদন জমা দেওয়া হয়েছিল। তখনো ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
যেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংস্থাকে মিছিল-মিটিং ও সভা-সমাবেশ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে সেখানে জাতীয় সংসদে বার বার প্রতিনিধিত্বকারী কোটি কোটি মানুষের সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর মতো সুশৃঙ্খল, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল রাজনৈতিক দলকে বারবার তাদের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামীর সাথে পুলিশ প্রশাসনের এ ধরনের বিমাতাসুলভ আচরণ বেআইনি, অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক ও স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।' নূরুল ইসলাম বলেন, 'শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের অধিকার বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকৃত। দেশের সংবিধান প্রত্যেক রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিকেই তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করার অধিকার দিয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের অধিকার প্রদান করা হয়েছে।
এ ছাড়াও শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করার অধিকারের স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলেও আছে। এর মাধ্যমে নাগরিক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের চর্চা, মানবাধিকার এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্র তৈরি হয়। সংবিধান প্রদত্ত এই অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকার ও তার দায়িত্ব প্রাপ্ত সংস্থাগুলোর।'
তিনি আরো বলেন, 'জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, রাজনৈতিক ও অন্য যেকোনো বিষয়ে মতপার্থক্য দূরে রেখে বিশ্বের সবার মানবাধিকার রক্ষায় ঐকমত্যে পৌঁছায়। জন্মগতভাবে সব মানুষ স্বাধীন এবং মর্যাদা ও অধিকারের ক্ষেত্রে সমান-সার্বজনীন ঘোষণাপত্রে তা উল্লেখ রয়েছে।'
এমতাবস্থায় তিনি জনগণের অধিকার আদায়ের এই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আন্তরিক ও সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন ও কর্মসূচি সফল করার জন্য তিনি ঢাকাবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন