পোল্ট্রি শিল্পে অবদান রাখছে নিউ হোপ এগ্রোটেক বাংলাদশ

পোল্ট্রি শিল্পে অবদান রাখছে নিউ হোপ এগ্রোটেক বাংলাদশ

পোল্ট্রি শিল্প বাংলাদেশের একটি অপার সম্ভাবনাময় ও আত্ম র্কমসংস্থানমুখী শিল্পখাত। বিশেষ করে আত্মর্কমসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে পোল্ট্রি শিল্প বাংলাদেশে নতুন সম্ভাবনার পথ তৈরি করেছে। দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা পূরণেও পোল্ট্রি খাত গুরুত্বর্পূণ অবদান রাখছে। বাংলাদেশের বর্তমানের মোট মাংসের চাহিদার ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশই পূরণ হচ্ছে এই পোল্ট্রি খাত থেকেই।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাণী সম্পদ খাতের পোল্ট্রি খাত একটি দীর্ঘকাল থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে যা দেশের গ্রামীণ পরিবারের গৃহস্থালি কাজের আয়বর্ধনের একটি হাতিয়ার। কারণ ডিম এবং মাংস সরবরাহের মাধ্যমে দেশের প্রোটিন ঘাটতি পূরণে পোল্ট্রি খাতের দেশীয় পুঁজি এবং দেশীয় উদ্যোগে তিলে তিলে গড়ে ওঠা এই শিল্পটি দেশের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখছে। পোল্ট্রি ব্যাপকভিত্তিক কর্মসংস্থানমুখী একটি সমৃদ্ধ শিল্প। বিশেষত আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এই শিল্প নতুন বিপ্লবের পথ দেখিয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশের প্রায় ১ কোটি মানুষের র্কমসংস্থান জড়িত। বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ছোট ও বড় খামার মিলিয়ে প্রায় ৭০ হাজারের বেশি পোল্ট্রি খামার রয়েছে দেশে। অনেক শিক্ষিত কর্মহীন যুবক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে গড়ে তুলেছে ছোট ও মাঝারি গোছরে পোল্ট্রি খামার। এতে দেশে পোল্ট্রি শিল্পের দ্রুত সম্প্রসারণ ঘটেছে সেই সাথে পোল্ট্রি শিল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ দাড়িয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা।

নিউ হোপ এগ্রোটেক বাংলাদশে লিমিটেড বাংলাদশেরে একটি সুপরচিতি র্শীষস্তররে পোল্ট্রি ফিড মিল। এটি চীনের নিউ হোপ লিহু গ্রুপ-এর একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান, যা কৃষি ব্যবসার জন্য বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।

বাংলাদেশে পোল্ট্রি খামারে ফিড সরবরাহে বিশেষ ভুমিকা রাখছে নিউ হোপ এগ্রোটেক বাংলাদেশ লিঃ। নিউ হোপ এগ্রোটেকের মাসিক ফিড উৎপাদন বর্তমানে ১৫ হাজার ম্যাট্রিক টন। যা স্বল্প মূল্যে খামারীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে কোম্পানি। সর্বোচ্চ মানসম্মত কাঁচামাল নির্ধারণ করে উপযুক্ত ফর্মুলার মাধ্যমে অত্যাধুনকি মেশিনের সাহায্যে ফিড উৎপাদন করে থাকে।

নিউ হোপ এগ্রোটেক বাংলাদেশের গুণগত মান সম্পর্কে নিউট্রেসনিস্ট চাও লিন বলেন, আমরা সবসময় আমাদের গ্রাহকদের গুণগত মান সম্পন্ন ফিড দিতে যত্নশীল। অন্য কোম্পানি এবং আমাদের মধ্যে পার্থক্য হল আমরা কখনই আমাদের কাঁচামালের গুণমানে আপস করি না এবং আমরা সারা বিশ্বের সেরা কোম্পানি থেকে আমাদের সমস্ত ফিড এডিটিভস আমদানি করি। আমাদের কাছে সব ধরনের লেটেস্ট টেস্টিং ইকুইপমেন্ট এবং মেশিন আছে।

কোম্পানির এক্সিকিউটিভ প্রকিউরমেন্ট অফিসার মোঃ মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি কিভাবে গুণগত মান সম্মত কাঁচামাল ক্রয় করা যায়। কাঁচামালের মান সম্পর্কে আমরা কোন আপস করি না। আমরা চেষ্টা করি এমন ভাবে কাঁচামাল ক্রয় করতে যাতে কোম্পানি এবং সরবরাহকারী উভয় লাভবান হন।

পোল্ট্রি শিল্পের বর্জ্য থেকে তৈরি হয় বায়োগ্যাস, বিদ্যুৎ ও সার যার পরির্পুণ বাস্তবায়ন করা গেলে জ্বালানী খাতে বিপ্লব সম্ভব। পাশাপাশি হালাল মাংস ও ডিমের বাজার ধরতে পারলে অর্জিত হতে পারে বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা, বিশেষত মধ্যপ্রাচ্য যেখানে বিশাল সংখ্যক বাংলাদেশী রয়েছে যাদের কাছে দেশীয় মাংস ও ডিম খুব প্রিয়।

বাংলাদেশে পোল্ট্রির উৎপাদন বেড়েছে। উৎপাদন বাড়ার সাথে সাথে কিছু ঝুকিও তৈরি হয়েছে। এই ঝুকি নিরসনের জন্য একটি ন্যাশনাল প্লান দরকার। পর্যাপ্ত পরিমানে সরকারী সহযোগীতা না থাকায় একটি সম্ভাবনাময় শিল্প হওয়া সত্ত্বেও সঙ্কটে পড়ছে দেশের এই শিল্পটি। টেকসই উন্নয়ন সবার জন্য পুষ্টির সরবরাহ নিশ্চিত করতে হলে পোল্ট্রি খামারগুলোকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। এ জন্য সরকারের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। 

সবচেয়ে বড় হতাশার বিষয় হলো, এখনো দেশে কোনো পোল্ট্রি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড বা কর্পোরেশন গড়ে ওঠেনি। ফলে যথাযথ নীতিনির্ধারণ যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে তেমনি দেশের খামারিবান্ধব প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন বিঘ্নিত হচ্ছে। 

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password