ফের বাঘের গর্জন শোনলো নিউজিল্যান্ড

ফের বাঘের গর্জন শোনলো নিউজিল্যান্ড

যদিও ম্যাচটা কোন বিশ্বকাপ নয় , নয় কোন ফাইনাল ম্যাচ তবুও একটা ম্যাচ জয়ে যেন সারা বাংলাদেশের মানুষ একটা বিশ্ব কাপের স্বাধ পেল। কোটি বাংলাদেশির কাছে এই ম্যাচটা যে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার ম্যাচ। সকালে চোখ কচলাতে কচলাতে অনেকে হয়তো বারবার যাচাই করতে চাইবে, ভুল দেখছি না তো!

ভাপকতে অবাগক হলেও সত্যি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে প্রথমবার হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বাংলার বাঘেরা। এ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ৯টি টেস্টসহ তিন ফরম্যাটে মোট ৩৩ ম্যাচ খেলে একটি জয় না পাওয়া বাংলাদেশ অবশেষে জয়ের দেখা পেয়েছে। মাউন্ট মঙ্গানুইতে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৪০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে কিউইদের ৮ উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা।


এই টেস্টের প্রথম থেকেই ব্যাটে-বলে কিউইদের শাসন করেছে বাংলাদেশ। বে ওভালে টস জিতে স্বাগতিকদের ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক।

ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় কিউইরা। তবে ডেভন কনওয়ের ১২২, হেনরি নিকলসের ৭৫ ও উইল ইয়ংয়ের ৫২ রানে ভর করে প্রথম ইনিংসে ৩২৮ রান তোলে স্বাগতিকরা। ৩টি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী মিরাজ। ২ উইকেট নেন মুমিনুল হক আর ১টি উইকেট নেন এবাদত হোসেন।

কিউইদের ৩২৮ রানের জবানে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করে ৪৫৮ রান। মুমিনুল হকের ৮৮, লিটন দাসের ৮৬, মাহমুদুল হাসানের ৭৮ ও নাজমুল হোসেন করেন ৬৪রান। কিউই বোলারদের সামলে ১৩০ রানের লিড নেয় বাংলাদেশ। ৪ উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট, ৩ উইকেট নেন নিল ওয়াগনার।

১৩০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা কিউই ব্যাটাররা চতুর্থ দিনেই খেই হারায় এবাদত, তাসকিনদের গতি আর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের কাছে। চতুর্থ দিনের শেষ সেশনেই হারিয়ে ফেলে পাঁচ উইকেট।

তবে রস টেলর ও উইল ইয়াং ৭৩ রানের জুটি গড়ে এগিয়ে নেন দলকে। ৫৪ ওভারে দলীয় ১৩৬ রানের মাথায় এবাদতের বলে ইয়াং ৬৯ রান করে ফেরার এক বল পরেই শূন্য রানে ফেরেন হ্যানরি নিকলস।

৫৬ ওভারের তৃতীয় বলে আবারও আঘাত এবাদতের টম ব্লান্ডেলকে ফেরান (শূন্য রানে) ১৩৬ রানের মাথায়। তাতে নিউজিল্যান্ডের দিন শেষ হয় ১৪৭ রানে ১৭ রানের লিড নিয়ে।

কিউইদের একমাত্র ভরসা রস টেইলরকে পঞ্চম দিনের দ্বিতিয় ওভারেই ৪০ রানে ফেরান এবাদত। টেইলরকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৫ উইকেট নেন এবাদত। এ ছাড়া ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পেসার রবিউল ইসলামের ৫ উইকেট নেওয়ার পর বাংলাদেশি কোনো পেসারের পাঁচ উইকেট পাওয়ার রেকর্ডও এটি।

টেইলরের বিদায়ের পর মাত্র ২২ রান যোগ করতেই সব উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানে শেষ হয় কিউইদের ইনিংস। এতে ৩৯ রানের লিড পায় স্বাগতিকরা। এবাদত নেন ৬ উইকেট, তাসকিন ৩টি ও মেহেদী মিরাজ নেন ১টি উইকেট।

মামুলি লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে টিম সাউদির করা ইনিংসের দ্বিতিয় ওভারে সাদমান ইসলাম বিদায় নেন ৩ রানে। এরপর ৩১ রানের জুটি গড়ে কাইল জেমিনসনের বলে ক্যাচ দিয়ে ১৭ রানে ফেরেন নাজমুল হোসেন।

বাকিটুকু পথ পাড়ি দেন মুমিনুল-মুশফিক। মুমিনুলের ব্যাটে আসে ১৩, মুশফিক করেন ৫ রান। টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে চার দিন দাপট দেখিয়ে পাওয়া এই জয় নিঃসন্দেহে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য। এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে ঘরের মাঠে টানা ১৭ টেস্ট অপরাজিত থাকার ধারারও শেষ হলো নিউজিল্যান্ডের।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password