ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষেরা

ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষেরা

ত্রাণের জন্য হাহাকার চলছে। কয়েকদিনের ভয়াবহ বন্যায় ঘরবাড়ি হারিয়ে বন্যার্তরা এখন চরম অসহায়। ত্রাণের খাবারই এখন তাদের একমাত্র অবলম্বন। সিলেটের উপকণ্ঠে বুধবার ত্রাণের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বন্যার্তরা। সুনামগঞ্জে বন্যার কিছুটা উন্নতি হলেও সিলেটে অপরিবর্তিত রয়েছে। দুই জেলার শত শত বাড়িঘর, হাটবাজার, স্কুল, মসজিদ, মন্দির এখনো পানিতে ভাসছে। খাবার ও শিশুদ্ধ পানির অভাবে আর্তনাদ করছে দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা।

সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও সমন্বয় না থাকায় সবার কাছে ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না। বানভাসিরা জানান, স্থানীয় প্রশাসন, রাজনীতিক, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন সংগঠন, অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে শুরু করে ফেসবুক, ইউটিউব ও টিকটক সেলিব্রেটিরাও সিলেটে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তাদের বেশির ভাগই শহরের আশপাশের এলাকা বা বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ত্রাণ দিচ্ছেন। প্রত্যন্ত এলাকার লোকজনের খোঁজ নিচ্ছেন না কেউ।

এতে ওইসব এলাকার বন্যার্তরা ত্রাণ পাচ্ছেন না। খাবার সংকটে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে অনেকের। এদিকে সিলেট-সুনামগঞ্জের পানিবন্দি এলাকা থেকে আরও ৫টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জে ৪টি ও সিলেটে ১টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে সিলেট বিভাগে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৮ জনে। সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কমতে থাকায় সেখানে ডায়রিয়া, আমাশয়, পেট ব্যথাসহ নানা পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া-জুড়ী উপজেলায় বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে রেল চলাচল। যে কোনো সময় সিলেট-ঢাকা, সিলেট-চট্টগ্রাম রেল চলাচল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কমলগঞ্জে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ৭টি স্থানে ধস দেখা দিয়েছে। এতে ওইসব এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। বন্যার কারণে সিলেটে টিসিবির পণ্য বিক্রি স্থগিত রাখা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমও।

সিলেট : সিলেটে মঙ্গলবার রাতভর বৃষ্টি হওয়ায় পানি কমেনি। উলটো কয়েকটি উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কুশিয়ারা ও সারি নদীর দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও অন্য নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে। সিলেট বাসিন্দারা জানান, বন্যাদুর্গত এলকায় যে যার মতো করে ত্রাণ বিতরণ করছে। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের সমন্বয় নেই। ফলে কোনো এলাকায় কয়েকবার ত্রাণ যাচ্ছে আবার কোনো এলাকায় একবারও নয়। যারা ত্রাণ বিতরণ করেন, তারা যাতায়াত সংকট বা না চেনার কারণে প্রত্যন্ত এলাকায় যাচ্ছেন না।

শহর এলাকার আশপাশে অথবা কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে ত্রাণ দিয়ে বিদায় নিচ্ছেন তারা। অথচ দূর-দূরান্তের বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এক সপ্তাহের বন্যায় অনেকের জমানো খাবার শেষ। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা। প্রত্যন্ত এলাকার এসব মানুষ ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বানভাসিরা বলছেন, সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরামা, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর উপজেলায় বন্যাকবলিত এলাকায় কিছু ত্রাণ গেলেও জেলায় নতুন করে প্লাবিত জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, গোলাপগঞ্জ, বিশ্বনাথ, ওসমানীনগর, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলায় ত্রাণ বিতরণের কোনো তৎপরতা নেই বললেই চলে। তবে এসব স্থানে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে কিছু ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।

সুনামগঞ্জে তিন দিন বৃষ্টি না হওয়ায় বন্যার পানি কমছে। তবে বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে শহরের পাড়া-মহল্লায়, রাস্তাঘাটে ভেসে উঠছে ময়লা-আবর্জনা। ছড়িয়ে পড়ছে দুর্গন্ধ। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন নানা রোগবালাইয়ে। এর মধ্যে ডায়রিয়া, আমাশয়, পেটে ব্যথা, জ্বরসহ নানা চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। সেনাবাহিনীর একটি দল বুধবার সকাল থেকে সুনামগঞ্জ শহরের শহিদ আবুল হোসেন মিলনায়তন প্রাঙ্গণে মানুষকে চিকিৎসাসেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ দেয়। অনেক নারী-পুরুষ সেখানে সেবা নেন।

চিকিৎসা দলে থাকা ক্যাপ্টেন কাজী তানজিদুর রহমান জানান, মানুষজন পানিবাহিত রোগ নিয়েই বেশি আসছেন। এছাড়া চর্মরোগও আছে। সদর উপজেলার মইনপুর গ্রামের বাসিন্দা আরজদ আলী বলেন, ছেলের পাতলা পায়খানা হচ্ছে। পেটে ব্যথা। তাই নিয়ে এসেছেন এখানে। নবীনগর এলাকার সুখচান বিবি (৫৫) বলেন, সকাল থেকে বমি হচ্ছে। খবর পেয়ে এই স্কুলে ওষুধ নিতে এসেছেন। মিনারা বেগম (৪০) নামের আরেক নারী বলেন, দুই দিন ধরে জ্বর, মাথাব্যথা। পানিতে থাকতে থাকতে তার মেয়ের পায়ে ঘা হয়ে গেছে। সুনামগঞ্জে পানিবন্দি এলাকা থেকে আরও ৪টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

শান্তিগঞ্জ উপজেলায় তিনজন মারা যান বলে জানান স্থানীয় থানার উপপরিদর্শক মো. খালেদ চৌধুরী। সোমবার উদ্ধার লাশের মধ্যে একজন নারী ও দুইজন পুরুষ। তবে তিনি তাদের নাম-পরিচয় বলতে পারেননি। একজন সিকিউরিটি গার্ডের লাশ মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা থেকে উদ্ধার করে শান্তিগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে সুনামগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্টেশনের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম। এছাড়াও সিলেটের গোলাপগঞ্জে নিখোঁজ হওয়া এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, বুধবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৮৯ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে দশমিক ৭ সেন্টিমিটার, শেরপুর পয়েন্টে দশমিক ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ থেকে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে সিলেট নগরীর তালতলা, মির্জাজাঙ্গাল, লামাবাজার, কুয়ারপাড়, লালাদীঘির পাড়, শিবগঞ্জ, তেররতন, শাহজালাল উপশহর, কুশিঘাট, কানিশাইল, গাজী বুরহান উদ্দিন রোড এলাকায় পানি আগের অবস্থানে রয়েছে।

বন্যাকবলিত নগরীর বাসিন্দারা বিশুদ্ধ পানির সংকটে রয়েছেন। নগরীর শাহজালাল উপশহর এলাকায় পানি কিছুটা কমলেও এখনো সেখানে নৌকা চলাচল করছে।

টিসিবির পণ্য বিক্রি স্থগিত--- পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এক কোটি নিম্নআয়ের উপকারভোগী পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে দেশব্যাপী বুধবার সকাল থেকে চারটি পণ্য বিক্রি শুরু করছে টিসিবি। কিন্তু বন্যা পরিস্থিতির কারণে আপাতত সিলেট বিভাগে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। মঙ্গলবার টিসিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ভোটার হালনাগাদ স্থগিত--- সিলেটসহ বন্যাকবলিত সব এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সব আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির সহকারী সচিব মো. মোশাররফ হোসেন মঙ্গলবার নির্দেশনাটি মাঠ পর্যায়ে পাঠিয়েছেন। রেল চলাচল বন্ধ হওয়ায় শঙ্কা--- কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে পানি বাড়লে বা স্রোত বাড়লে ট্রেন চলাচল অব্যাহত রাখা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার হরিপদ সরকার জানান, গেল ৩ দিন থেকে একটি স্থানে রেল লাইনের ১ ইঞ্চি উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানির স্রোত কম থাকায় গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। তবে পানি কিংবা স্রোত বাড়লে ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ছাতক (সুনামগঞ্জ) : ছাতকে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। শহর এলাকাসহ গ্রামাঞ্চলের উঁচু এলাকার ঘরবাড়ি থেকে বন্যার পানি নামলেও আশ্রয় কেন্দ্রে এখনো রয়েছেন হাজারো মানুষ। উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি এখনো পানিতে থই থই করছে। সারা দেশের সঙ্গে ছাতকের সড়ক যোগাযোগ রয়েছে বন্ধ। এদিকে ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ ও ছাতক সড়ক ভেঙে যাওয়ায় ৯ দিন ধরে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ।

মৌলভীবাজার, কুলাউড়া ও কমলগঞ্জ : কুলাউড়া-বরমচাল স্টেশনের মধ্যবর্তী ফানাই-আনফানাই নদীর ব্রিজের মধ্যবর্তী স্থানে রেললাইনে বন্যার পানি উঠেছে। এতে যে কোনো সময় ট্রেন চলাচল বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল গ্রামের জাবেদ আহমদ বলেন, পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। অধিকাংশ বাড়ির টয়লেট তলিয়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন বাসিন্দারা। আবার কেউ কেউ বিশুদ্ধ খাবার পানি পাচ্ছেন না। জুড়ী উপজেলার শাহপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, ওই গ্রামের প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়িতে পানি উঠেছে।

আশ্রয় কেন্দ্রে গাদাগাদি করে বন্যার্তরা বসবাস করছেন। শহরের আশপাশে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ দেওয়া হলেও প্রত্যন্ত এলাকায় কেউ যাচ্ছেন না। ফলে গ্রামের মানুষের মধ্যে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ৭টি স্থানে ধস দেখা দিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে আরও ৫টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ১২০ কিলোমিটার বাঁধের রহিমপুর ইউনিয়ণের লক্ষ্মীপুর, খুশালপুর, মুন্সীবাজারের সুরানন্দপুর, পৌর এলাকার গোপালনগর, দক্ষিণ কুমড়াকাপন, রামপাশা, আলেপুর, মাধবপুর ইউনিয়নের হিরামতি ও আদমপুরের ঘোড়ামারা এলাকায় রোববার রাতে ব্যাপক ধস দেখা দেয়।

ফলে ওইসব এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর, ঘোড়ামারা, সুরান্দনপুর এলাকায় মানুষজন রাত জেগে মাটিভর্তি বস্তা ফেলে মাটিভর্তি বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেছেন। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সময়মতো মেরামত না করায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, দ্রুত বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বড় ধরনের একটি প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এখানে আমাদের গাফিলতি নেই বা কোনো অনিয়ম হয়নি।

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) : ‘আর শুকনো খাবার চাই না, এবার রান্না করা খাবার চাই’-সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বন্যাকবলিত এক ব্যক্তির এমন আকুতি ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর তাহিরপুরের বাদাঘাট এলাকার একদল যুবক নিজেরাই ১২ হাজার টাকার তহবিল গঠন করে। সেই টাকায় বিরিয়ানি রান্না করে নিজেরাই বিতরণ করেন বন্যার্তের মাঝে।

জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) : জামালগঞ্জের অনেক বানভাসি আশ্রয় কেন্দ্রে জায়গা না পেয়ে নৌকায় বসবাস করছে। খাবার সংকটে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে তাদের। সদর ইউনিয়নের চানপুর খেয়াঘাটে নৌকায় আশ্রয় নেওয়া লোকজন বলেন, বাড়িঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কয়েক দিন ধরে আমরা ঘাটে নোঙর করা একটি বাল্কহেডে আশ্রয় নিয়েছি। ত্রাণ সহয়তাকারীরা শুধু আশ্রয় কেন্দ্রে যারা আছে তাদের কাছে ছুটে যায়। আমাদের কেই ত্রাণ দিচ্ছেন না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব জানান, বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।

নবীগঞ্জ ও মাধবপুর (হবিগঞ্জ) : নবীগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। উজান-ভাটি দুদিকের পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে এ উপজেলায়। নবীগঞ্জ পৌরসভা ও উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে কয়েক লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ ছাড়া মাধবপুর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৫০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ওঠায় ৪৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে।

নেত্রকোনা : পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী উপজেলা দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, বারহাট্টা ও খালিয়াজুরী উপজেলাসহ দশ উপজেলার ৭৫টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। জেলার ৩৪২টি আশ্রয় কেন্দ্রে সোয়া লাখ বানভাসি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার পানিতে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে প্রায় ৩০ হাজার পুকুরের মাছ। গ্রামীণ সড়ক পানিতে তলিয়ে ও ভেঙে যাওয়ায় বিভিন্ন ইউনিয়নের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password