ভারতে চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী সেনা নিয়োগে 'অগ্নিপথ' প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ গতকাল রবিবারও অব্যাহত ছিল। গতকাল পর্যন্ত দেশটির ১৩টি রাজ্যে বিক্ষোভের আঁচ লেগেছে। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের রেল যোগাযোগ গতকালও বিঘ্নিত হয়। 'অগ্নিপথ' প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের কারণে বিহারে গতকাল পর্যন্ত সাত শতাধিক ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছে। উত্তর প্রদেশে গ্রেপ্তার হয়েছে ২৫০ জনের বেশি।
এগুলো হচ্ছে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় বিক্ষোভ হওয়া তিনটি রাজ্যের দুটি। অন্য রাজ্যটি হচ্ছে তেলেঙ্গানা। ভারতের পূর্ব-মধ্য রেল বিভাগ গতকাল জানায়, রবিবার উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ট্রেনের যাত্রা বাতিল, সংক্ষিপ্ত বা সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়। অব্যাহত বিক্ষোভের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল আকারে-ইঙ্গিতে এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন।
রাজধানী নয়াদিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক যে ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে, ভালো কিছু করতে উদ্যোগী হলেও তাতে রাজনীতির রং লেগে যায়। ' এদিকে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সহিংসতা এড়িয়ে আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত 'অগ্নিবীর'দের মধ্যে মাত্র ২৫ শতাংশ চার বছর পর স্থায়ী হবেন। অন্যদের এককালীন ১০-১১ লাখ রুপি দিয়ে অব্যাহতি দেওয়া হবে। বিক্ষোভরত তরুণরা আশঙ্কা করছেন, নতুন প্রকল্পের মধ্য দিয়ে স্থায়ী চাকরির সুযোগ কমে আসবে। অল্প সময়ের প্রশিক্ষণে ভালো সেনা তৈরি না হওয়ার আশঙ্কা নিয়েও কেউ কেউ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গতকাল দেশের তিন বাহিনীর তিনজন শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধি সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্পের সমর্থনে কথা বলেন।
এতে কেন্দ্রীয় সেনা বিষয়ক দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল পুরী বলেন, ভবিষ্যতে যুদ্ধে প্রযুক্তির ওপর ভর করে এগিয়ে যেতে হবে। প্রযুক্তির ব্যাপারে তরুণরা অনেক বেশি তৎপর। এ কথা বিবেচনা করেই এই পদক্ষেপের (অগ্নিপথ) কথা ভাবা হয়েছে। প্রকল্পটি প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, আপাতত সেনাবাহিনীতে ৪৬ হাজার অগ্নিবীর নিয়োগ করা হবে। পরে তা বাড়িয়ে এক লাখ ২৫ হাজার করা হবে।
আর শহীদ অগ্নিবীরদের পরিবার এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাবে। এর আগে শনিবার কেন্দ্রীয় সরকার কিছু ছাড়ের ঘোষণা দিয়ে জানায়, অগ্নিবীরদের জন্য চাকরিতে প্রবেশের বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ২১ থেকে ২৩ বছর করা হবে। চার বছর সেনাবাহিনীতে থাকার পর অন্যান্য বাহিনীতে নিয়োগের কোটা থাকবে। গতকাল সরকারি মহল থেকে বলা হয়, আন্দোলনের জেরে এই ঘোষণা আসেনি, বরং আগে থেকেই এর পরিকল্পনা ছিল।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা, এনডিটিভি
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন