ইউরোপের দেশ সুইডেনে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন অবমাননার ঘটনায় এখনো উত্তপ্ত বিশ্ব। এখানেই শেষ নায়। সুইডেনের প্রতিবেশী দেশ ডেনমার্কে এবার পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২১ জুলাই) দেশটির ইরাকি দূতাবাসের সামনে এই কুরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে ইরাকের পতাকাও পোড়ানো হয়। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।
তুরস্কের ইংরেজি দৈনিক ডেইলি সাবাহ বলছে, সুইডেন ও ডেনমার্কে এই ধরনের ঘৃণ্য কাজের আর যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মুসলিমরা। প্রতিবেদনে টিআরটি ওয়ার্ল্ড বলে, শুক্রবার সুইডেনের ‘ডানস্কে প্যাট্রিওটার’ নামের একটি অতি অতিজাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী কোপেনহেগেনে ইরাকি দূতাবাসের সামনে পবিত্র কোরআন পোড়ায়।
এ সময় সেখানে ড্যানিশ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। গোষ্ঠীটি কোপেনহেগেনে কোরআন পোড়ানোর পাশাপাশি ইসলামবিরোধী বিভিন্ন স্লোগানও দেয়। পরে তারা কুরআন পোড়ানোর পুরো ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে। গত বৃহস্পতিবার ভোরে সুইডেনে আবারো কুরআন পোড়ানোর ঘটনার প্রতিবাদে ইরাকি নাগরিকদের একটি দল বাগদাদের সুইডিশ দূতাবাসে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে তারা ইরাকে সুইডিশ দূতাবাসে হামলার প্রতিবাদে এই কাজ করেছে বলে গোষ্ঠীটি দাবি করে। সম্প্রতি সুইডেনে একটি মসজিদের সামনে পবিত্র কোরআন পুড়িয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে একদল আন্দোলনকারী। পুলিশের অনুমতি সাপেক্ষেই এমন ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড ঘটে। সুইডেন প্রশাসনও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
ওই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে মুসলিম বিশ্ব। ওই ঘটনায় তুরস্ক, পাকিস্তান ও সৌদি আরবসহ মুসলিম বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কাউন্ট্রিজও (ওআইসি)। শুধু তাই নয়, কোরআন অবমাননার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ।
এরপরও চলতি সপ্তাহে সুইডেনে নতুন করে আবারও কোরআন পোড়ানোর অনুমতি দেয় দেশটির পুলিশ। ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরাকের প্রধানমন্ত্রী শিয়া আল-সুদানি বাগদাদে নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূতকে অবিলম্বে ইরাক ছাড়তে নির্দেশ দিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পবিত্র কুরআন পোড়ানো, ইসলামের পবিত্র বিষয়কে অবমাননা এবং ইরাকি পতাকা পোড়ানোর জন্য সুইডিশ সরকারের বারবার অনুমতি দেওয়ার কারণে ইরাক সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন