বাংলাদেশ পুলিশের অভিভাবক মাননীয় ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম(বার) মহোদয় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের এই ইউনিট উদ্বোধন করেন। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়ের সার্বিক দিকনির্দেশনা ও ইনোভেটিভ চিন্তা প্রসূত এই ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সর্বমোট ৫০০ সিসি ক্যামেরা প্রতিষ্ঠা করে পুরো মেট্রোপলিটন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্ল্যান করা হয়েছে।
এর মধ্যে প্রায় ৩৫০ টির অধিক ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে এবং বাকি ক্যামেরা স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মেট্রোপলিটন এলাকায় রাস্তার সম্প্রসারণের কাজ চলমান থাকায় সকল ক্যামেরা স্থাপনের কাজ করতে কিছুটা বিলম্ব হলেও অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুলোতে ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে।
আধুনিক প্রযুক্তির লেটেস্ট ভার্সনের আইপি ক্যামেরা ও কমিউনিকেশন টেকনোলজির সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ক্যামেরা হাই রেজুলেশন ভিডিও ধারন করতে পারে এবং উচ্চগতি সম্পন্ন ডাটা ট্রান্সফারের জন্য ১২ কোরের অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা হয়েছে। এক কথায় রাজশাহী মহানগর বাসীর নিরাপত্তা, অপরাধ ও অপরাধী শনাক্তকরনে সর্বাধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ও কমিউনিকেশন টেকনোলজি বা সিস্টেমের ব্যবহার করা হচ্ছে।
অপারেশন কন্ট্রোল এন্ড মনিটরিং সেন্টার এর সর্বমোট জনবল হচ্ছে ৯ জন। একজন সহকারী পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে অপারেশন ও টেকনিক্যাল কার্যক্রমের জন্যে ১ জন ইন্সপেক্টর ১ জন সাব-ইন্সপেক্টর ও ৬ জন কনস্টেবল এবং বেতার কমিউনিকেশনের জন্যে ৩ জন কনস্টেবল সার্বক্ষণিক ও পালাক্রমে দায়িত্বরত রয়েছে।
আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সর্বাধুনিক এই ইউনিটটি প্রতিষ্ঠার পর রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকায় সংঘটিত সকল ক্লু-লেস অপরাধ ও অপরাধী শনাক্তকরণে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। এই ইউনিটটি প্রতিষ্ঠার এক বছর পূর্তিতে একটি পরিসংখ্যান ভিত্তিক সাফল্যের তথ্য দেয়া হলোঃ
প্রায় ১০০ এর অধিক চুরির ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও চোর শনাক্ত করণ হয়েছে। চুরির ঘটনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে স্বর্ণচুরি, বিভিন্ন দোকান চুরি, ঔষধ চুরি, মোবাইল চুরি, অটো রিক্সা চুরি, মটরসাইকেল চুরি, গরু চুরিসহ অন্যান্য চুরির রহস্য উদঘাটন।
প্রায় ২৫ টির অধিক ছিনতাই ঘটনার রহস্য উদঘাটন সহ অপরাধী সনাক্ত করন।
প্রায় ২০ টির অধিক ইভটিজিংয়ের ঘটনায় অপরাধী সনাক্ত করনসহ মহানগরীর কিশোর অপরাধ দমনে সার্বক্ষণিক মনিটরিং।
প্রায় ১৫ টির অধিক হারানো ঘটনার রহস্য উদঘাটন।
গত এক বছরে রাজশাহী মহানগর এলাকার ২০ টির অধিক মারামারির ঘটনার রহস্য উদঘাটন সহ আসামী সনাক্তকরণ।
ছেলে/মেয়ে হারানো বা হারিয়ে যাওয়া নাটক করা সহ বিভিন্ন ব্যক্তি হারানোর প্রায় ১৫ টির অধিক ঘটনার রহস্য উদঘাটন।
প্রায় ১০ টির মত অজ্ঞান পার্টির ঘটনার আসামি শনাক্ত করণ।
৫০টির অধিক সড়ক দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ সনাক্ত সহ দ্রুত সংবাদ প্রেরণ।
১০ টির অধিক ক্লু-লেস মার্ডার মামলার রহস্য উদঘাটন সহ আসামি শনাক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন। এখন পর্যন্ত এই ইউনিটটি সর্বমোট ২৭০ টির ও অধিক ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও আসামি শনাক্তকরনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করেছে।
এছাড়াও ট্রাফিক কন্ট্রোল, বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রোগ্রামের মিছিল/র্যালী/ সমাবেশ, বিশেষ দিবসের পর্যবেক্ষণের জন্যে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজশাহী মহানগরের সকল গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, মোড় ও স্থাপনার নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এই ইউনিটটির সার্বক্ষণিক মনিটরিং এর কারনে বিগত বছরের তুলনায় মহানগরীতে প্রায় ৩০/৪০ শতাংশ অপরাধ কমেছে।
একটি আধুনিক নগরীর পূর্বশর্ত হচ্ছে সকল কিছু ডিজিটালাইজড করা। রাজশাহী মহানগরীকে ডিজিটাল মহানগরীতে রুপান্তরিত করার প্রথম ধাপ ই হচ্ছে পুরো মহানগরীকে সিসি ক্যামেরা দিয়ে নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করে দেয়া যা রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতা ও সফলতার সাথে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়ের দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ভাবনায় রাজশাহী মহানগর ধীরে ধীরে নিরাপদ ও অপরাধমুক্ত নগরীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সর্বোপরি অপারেশন কন্ট্রোল এন্ড মনিটরিং সেন্টার (সেন্ট্রাল সিসি ক্যামেরা ইউনিট) রাজশাহী মহানগরকে শান্তির মহানগরে প্রতিষ্ঠায় সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন