তীব্র গরমের হাত থেকে রেহাই পেতে লবণ ছিটিয়ে এক অভিনব পদ্ধতিতে বৃষ্টিপাত ঘটানো হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। কৃত্রিম এ পদ্ধতির নাম ক্লাউড সিডিং। রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার না করে বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বন করায় এটিকে পরিবেশ বান্ধব বলে মন্তব্য করছেন কর্তৃপক্ষ। লবণ ছিটিয়ে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টিপাত ঘটানো হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
ক্লাউড সিডিং পদ্ধতিতে ঘটানো হচ্ছে এই বৃষ্টিপাত। এ প্রক্রিয়ায় মুলত রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহৃত হলেও, আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ ব্যবহার করছে লবণ। ফলে তা পরিবেশের জন্য অনেক বেশি নিরাপদ বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মরুভূমির দেশ আরব আমিরাতে বৃষ্টিপাত তেমন হয় না। তারপর গেল কয়েক বছর ধরেই প্রচণ্ড তাপমাত্রায় পানির সংকট বেড়েছে এখানে।
সেই সংকট মোকাবেলায় এবার ক্লাউড সিডিং প্রক্রিয়া শুরু করেছে দেশটি। মূলত মেঘের মধ্যে রাসায়নিক পদার্থ ছড়িয়ে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টিপাত ঘটানো হয় এই প্রক্রিয়ায়। রাসায়নিকের পরিবর্তে, লবণ ব্যবহার করছে আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে ফ্লেয়ারের মাধ্যমে লবণ ছিটানো হয় মেঘের মধ্যে। লবণে থাকা সোডিয়াম ও পটাশিয়াম ক্লোরাইড মেঘের সাথে বিক্রিয়া করে পরিণত হয় বৃষ্টিতে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এই প্রকিয়ার ফলে আগের চেয়ে বেড়েছে বৃষ্টির পরিমাণ।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রকল্প প্রধান আবদুল্লাহ আল হাম্মাদি বলেন, মেঘে লবণ ছিটানোর মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বৃষ্টিপাতের হার বেড়েছে। আগের এখন প্রায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। বিমান চালক আহমেদ আল জাবেরি বলেন, একজন বিমান চালককে যত ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, তার অন্যতম এই ক্লাউড সিডিং। যখন আমরা মেঘের মধ্যে প্রবেশ করি তখন প্রচণ্ড ঝাঁকুনির সৃষ্টি হয়।
সেই সাথে বজ্রাঘাতেরও শঙ্কা থাকে। অন্য যেকোনো পদ্ধতির চেয়ে লবণের মাধ্যমে কৃত্রিম বৃষ্টিপাত অনেক বেশি নিরাপদ বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। ব্রিটেনের গবেষক হাওয়ার্ড গ্রাহাম বলেন, সাধারণ লবণ যা আমরা খাই মূলত সেটাই ব্যবহৃত হয় এই প্রক্রিয়ায়। ফলে এটা নিরাপদ। পরিবেশ এবং প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর নয়। খুবই ছোট এবং হালকা বিমান এই ক্লাউড সিডিং করে বিধায়, এ থেকে কার্বন নিঃসরণও কম হয়। কর্তৃপক্ষ বলছে, খুব শিগগিরই পুরো আরব আমিরাতজুড়েই চালানো হবে লবণের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টিপাত ঘটানোর প্রক্রিয়া।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন