মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে উত্তাপ যেন থামছেই না। উত্তরপ্রদেশসহ দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ-সহিংসতায় অন্তত দু'জনের প্রাণহানি আর গ্রেপ্তার হয়েছেন তিন শতাধিক বিক্ষোভকারী। ভেঙে দেওয়া হয়েছে বিক্ষোভকারী কয়েকজনের বাড়িঘর। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে মুসলিম বিশ্ব তথা তেলসমৃদ্ধ দেশগুলোর সম্পর্কের অবনতির আশঙ্কা করছেন বিশ্নেষকরা।
অন্যদিকে, বিভিন্ন দেশ ও মানবাধিকার সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করে সবার সহাবস্থান নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিমপ্রধান দেশের প্রতিবাদের মুখে এরই মধ্যে নড়েচড়ে বসেছে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি সরকার। পরিস্থিতি যাতে আর ঘোলাটে না হয়, সে জন্য কেন্দ্রীয় বিজেপির পক্ষ থেকে দলটির নেতাদের এ বিষয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, এ নির্দেশনার পর কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের নেতারা এ বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকছেন, বিশেষ করে কর্ণাটকের নেতারা এ বিষয়ে কোনো বিতর্কে যাবেন না বলে জানিয়েছে বিজেপি সূত্র। মধ্যপ্রদেশের নেতারাও একই কথা জানিয়েছেন। সব ধর্মের মানুষকে নিয়েই বিজেপি সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে ক্ষমতাসীন দলটির এক নেতা বলেন, মুসলিমরা বাইরের কেউ নন, তাঁরা আমাদের সংস্কৃতিরই অংশ, তাঁদের পূর্বপুরুষদের অনেকেই হিন্দু ছিলেন।
এদিকে বিতর্কিত ওই মন্তব্য ঘিরে তেলসমৃদ্ধ দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতির আশঙ্কা করছেন বিশ্নেষকরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সহাবস্থানের আহ্বান জানিয়েছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের মধ্যে শ্রদ্ধা ও একসঙ্গে বসবাসে বিশ্বাস করে চীন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও ভারতের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত। বিক্ষোভকে ঘিরে মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ, নির্বিচারে আটক, শাস্তি হিসেবে বাড়িঘর ভেঙে দমন-পীড়ন চালানো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও মানদণ্ডের বিষয়ে ভারতের প্রতিশ্রুতির সম্পূর্ণ লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার সংগঠনটি। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন