সারাবিশ্ব কোরিয়ান কে-পপ, নাটক বা সিনেমায় মাতোয়ারা থাকলেও উত্তর কোরিয়ায় তা নিষিদ্ধ। আইন ভঙ্গ করলেই পেতে হবে কঠোর শাস্তি। দক্ষিণ কোরিয়ার নাটক-সিনেমা দেখার অপরাধে উত্তর কোরিয়ার দুই কিশোরকে জনসম্মুখে শাস্তি দেয়া হয়েছে। সাজা হিসেবে ১২ বছর ‘কঠোর পরিশ্রম’ করতে হবে তাদের। তাদেরকে সাজা দেয়ার একটি ভিডিও সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি এখন প্রকাশ্যে এলেও ধারণা করা হচ্ছে, সেটি ২০২২ সালের। শাস্তি পাওয়া দুই কিশোরের বয়সই ১৬ বছর।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্টেডিয়ামে হাজারও শিক্ষার্থীর সামনে অভিযুক্তদের ১২ বছরের কঠোর পরিশ্রমের সাজা দেয়া হয়। এ সময় সবার মুখে ছিল মাস্ক। প্রতিবেশী হলেও দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে চিরবৈরী সম্পর্ক উত্তর কোরিয়ার। তাই, দক্ষিণ কোরিয়ায় নাটক-সিনেমা, মিউজিক ভিডিও দেখা উত্তর কোরিয়ায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। উল্লেখ্য যে, প্রতিবেশি দেশটির সংস্কৃতি উত্তর কোরিয়ায় নিষিদ্ধ। এমনকি দক্ষিণ কোরিয়ানদের মতো দেশটির নাগরিকদের কথা বলাও নিষেধ।
ফলে, দেশটির কোনো ভিডিও দেখে কিংবা গান শুনে কেউ ধরা পড়লে কিম জং উনের দেশে পেতে হয় কঠোর শাস্তি। যদিও শাস্তির এসব ঘটনা বহির্বিশ্বে খুব একটা প্রকাশ পায় না। বিধিনিষেধের কারণে দেশটি সম্পর্কে খুব কম তথ্যই প্রকাশ পায়। ধারণা করা হচ্ছে, দেশের অন্য তরুণদের সতর্ক করার জন্য পিয়ংইয়ং প্রশাসনই ধারণ করেছে ভিডিওটি। যা বহির্বিশ্বে প্রকাশ করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ অ্যান্ড নর্থ ডেভেলপমেন্ট (স্যান্ড)।
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার কে-ড্রামা, কে-পপ বিশ্বজুড়েই বেশ জনপ্রিয়। উত্তর কোরিয়ার অনেকেও লুকিয়ে কে-ড্রামা দেখে থাকেন। বলা হচ্ছে, দু-একজনকে প্রকাশ্যে শাস্তি দিয়ে বাকিদের বিধিনিষেধ না মানার পরিণতি সম্পর্কে বার্তা দিচ্ছে দেশটির সরকার। স্যান্ডের প্রেসিডেন্ট চই কিয়ং-হুই বলেন, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার সমাজে প্রতিবেশি দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্কৃতির ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। এছাড়া, উত্তর কোরিয়ার তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কিম জং উনের কঠোর বিধিনিষেধ মানার বিষয়ে অনীহা তৈরি হয়েছে। বাকি নাগরিকদের সতর্ক করার জন্যই শিক্ষার্থীদের প্রকাশ্যে এই শাস্তি দেয়া হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন