বরিশাল নগরীর রুপাতলীতে ইয়াসিন নামের ৯ বছরের এক শিশুর গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে বাংলাদেশ বেতারের আঞ্চলিক কার্যালয়সংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত টয়লেট থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। শিশুটিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে পরিত্যক্ত ওই টয়লেটে ফেলে রাখা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে।
নিহত ইয়াসিন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ছগির হোসেনের ছেলে। ছগির ঢাকার মহাখালীতে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে থাকেন। ইয়াসিন দাদি শিরীন বেগমের সঙ্গে গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের ফুলঝুড়ি গ্রামে থাকত। গত সোমবার চিকিৎসার জন্য ইয়াসিনকে নিয়ে দাদি শিরীন বেগম বরিশালের রুপাতলী এলাকায় বোন আলেয়া বেগমের বাসায় ওঠেন।
দাদি শিরীন বেগম জানান, নিজের চিকিৎসার জন্য গত সোমবার ৩১ জানুয়ারি নাতি ইয়াসিনকে নিয়ে ঢাকা থেকে বরিশালের রুপাতলী এলাকায় বোন আলেয়া বেগমের বাসায় ওঠেন। কিন্তু সেখানে টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় বোনের সঙ্গে দিনমজুরের কাজ শুরু করেন শিরীন বেগম। বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা জোগাড় হলেই নাতিকে নিয়ে বরগুনায় ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। বাড়ি গিয়ে নাতিকে স্থানীয় একটি মাদরাসায় ভর্তি করার কথা ছিল।
শুক্রবার সকালে নাতিকে বোনের বাসায় রেখে কাজে যান। দুপুরের ফিরে এসে তাকে দেখতে না পেয়ে বোন আলেয়া বেগমের কাছে জানতে চাইলে ইয়াসিন বাইরে গেছে বলে জানান তিনি। কিন্তু বিকেলেও বাসায় ফিরে না আসায় আলেয়াসহ তাঁর স্বামী সিরাজ ও ছেলে আলামিনকে নিয়ে খুঁজতে বের হন। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে খুঁজে না পেয়ে ইয়াসিনের বাবা ছগির হোসেনকে বিষয়টি জানান।
খবর পেয়ে ছগির ও তাঁর বর্তমান স্ত্রী শনিবার সকালে বরিশাল আসেন। এরই মধ্যে বেতারের আঞ্চলিক কার্যালয়সংলগ্ন ওই পরিত্যক্ত টয়লেটে ইয়াসিনের গলা কাটা লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ফজলুল করিম বলেন, 'শিশুটিকে যেভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে তা লোমহর্ষক ও পরিকল্পিত। পুরো বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। এ ঘটনায় শিশুটির দাদির বোন আলেয়া বেগম, তাঁর স্বামী সিরাজুল ইসলাম ও ছেলে আলামিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। '
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন