নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিম এমপির তিন কর্মী ও সমর্থককে টাকা দিয়ে ভোট কেনার দায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার চাকরাইল নিমতলী মোড় নামক স্থানে ভোট কেনার সময় তাঁদের হাতেনাতে আটক করে এলাকাবাসী। ঘটনাটি সংশ্লিষ্টদের জানালে সেখানে থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকতা হাজির হন। এ সময় তাঁদের কাছে নগদ ১৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এরপর রাতেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোসা. আতিয়া খাতুন নির্বাচন উপলক্ষে ঘুষ গ্রহণের জন্য ১৮৬০ সালের ঘুষ গ্রহণ অপরাধে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেন। এসময় থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মাহবুব আলমসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন– উপজেলার বিলাশবাড়ি ইউনিয়নের মৃত মফিজ মন্ডলের ছেলে মো. ফুলবর (৫৩), ভগবানপুর গ্রামের মৃত ইয়াছিন আলীর ছেলে বদলগাছী কৃষি অফিসের নাইট গার্ড মো. স্বাধীন হোসেন (৪৩) এবং একই ইউনিয়নের দিপগঞ্জ হলুদ বিহার এলাকার মৃত মকবুলের ছেলে মো. মন্জু (৫৪)। তাঁরা সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থী ছলিম উদ্দিন তরফদারের সমর্থক বলে স্থানীয়রা জানান।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, ভোটের আগের রাতে টাকার বিনিময়ে ভোট কেনা হতে পারে এমন আশংকা ছিল। সন্ধ্যায় আব্দুস সালাম চেয়ারম্যানের বাড়িতে টাকা লেনদেন হয়। কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে চাকরাইল নিমতলীর মোড় নামক স্থানে গিয়ে টাকা ভাগাভাগি করে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন কথা।’

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোসা. আতিয়া খাতুন বিষয়টি নিশ্চিত করে মুঠোফোনে বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্তদের কাছ থেকে নগদ ১৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে ঘুষ গ্রহণের জন্য ওই তিনজনকে ১৫দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং অফিসার গোলাম মওলা রাত ১১টার দিকে সংবাদ মাধ্যমে লিখিতভাবে জানান, রাত সাড়ে ৮টায় বদলগাছি উপজেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ছলিম উদ্দীন তরফদারের (ট্রাক মার্কা) তিনজন কর্মী ভোটারকে নগদ টাকা দেওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন আটক করে। খবর দিলে এসিল্যান্ড গিয়ে টাকাসহ তাঁদের পায়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা দোষ স্বীকার করে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাঁদের নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে ১৫ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং জব্দ ১৫ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।