তুরস্কের ফুটবল মাঠ এখন কবরস্থান

তুরস্কের ফুটবল মাঠ এখন কবরস্থান

তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৪৫ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে শুধু তুরস্কেই ৩৯ হাজারের বেশি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর পাজারকিকের একটি ফুটবল মাঠ করবস্থানে পরিণত হয়েছে। মাত্র কয়েক দিন আগেও সেখানে ফুটবল খেলা হতো এবং মানুষ খেলা দেখতে ভিড় জমাতো। কিন্তু এসব এখন শুধুই অতীত।

মাঠজুড়ে এখন কেবল কবর আর গর্ত। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে ভূমিকম্পের পর শুধু দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ কাহরামানমারাশের বিভিন্ন শহর থেকেই ২৭ হাজারেরও বেশি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার কবরস্থানগুলোতে আর কবর দেওয়ার মতো জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়েই কর্তৃপক্ষকে নিত্য নতুন জায়গা খুঁজে বের করতে হচ্ছে।

পাজারকিকের ফুটবল মাঠটিতে দেখা যায়, প্রতিটি কবরের মাথায় লম্বালম্বিভাবে পোঁতা আছে একটি করে কাঠের তক্তা। কোনো কোনো তক্তার শীর্ষদেশ মুড়ে দেওয়া হয়েছে লাল রঙের স্কার্ফ বা ওড়নায়। মৃতের নাম ও মৃত্যুর তারিখ লেখা রয়েছে সেসব তক্তায়। তবে সবার মৃত্যুর তারিখ সেই একই দিন অর্থ্যাৎ ৬ ফেব্রুয়ারি। ওইদিনই পর পর কয়েক দফা ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল তুরস্ক ও সিরিয়া। হুসেইন একিস নামের এক নারী তার ভাতিজি, স্বামী এবং দু’সন্তানকে কবর দিতে এসেছেন পাজারকিকের সেই ফুটবল মাঠটিতে।

তিনি বলেন, মৃতদেহ উদ্ধার করতে আমাদের দশ দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। গত ১০ দিন ধরে ধংসস্তূপ আগলে বসে ছিলাম আমরা। ভূমিকম্পের পর থেকে এ পর্যন্ত কাহরামানমারাশ ও তার আশপাশের এলাকায় ১০ হাজার মানুষকে কবর দেওয়া হয়েছে। যে কোনো কবরস্থানে গেলেই চোখে পড়ে হাজার হাজার নতুন কবর।

প্রায় প্রতিটি কবরস্থানেই একজন ইমাম সবসময় জানাজা পড়ানো ও কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করার অপেক্ষা রয়েছেন। তুরস্কের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিন্ত্রণাধীন দপ্তরের পরিচালক বুরহান ইসলেইয়েন বলেন, কেউ যদি মনে করেন সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে গাফিলতি করছে, তাহলে সেটি ভুল ধারণা। সরকারি বিভিন্ন বাহিনীর সহায়তায় ইতোমধ্যে আমরা প্রায় ১০ হাজার মৃতদেহ কবর দিতে পেরেছি। সারা দিন একের পর এক মরদেহ আসছে। আমাদের খুব দ্রুত কাজ করতে হচ্ছে।

সূত্র: রয়টার্স

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password