মাত্র তিন ঘণ্টার ব্যবধানে নওগাঁয় দুই খুন

মাত্র তিন ঘণ্টার ব্যবধানে নওগাঁয় দুই খুন

মাত্র তিন ঘণ্টার ব্যবধানে নওগাঁয় দুই ব্যক্তি নির্মমভাবে খুনের শিকার হয়েছেন। এ ব্যাপারে পৃথক পৃথক হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে খুনের পর লুণ্ঠিত ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে।

মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন জানান, রোববার (১৯ নভেম্বর) সকালে উপজেলার নওহাটা মোড়ে ফয়েজ উদ্দিন কোল্ড স্টোরেজের দক্ষিণ পাশে ভীমপুর মৌজায় এক যুবকের লাশ পাওয়া যায়। মুখমণ্ডল ও বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র ও হাতুড়ির আঘাতে নির্মমভাবে তাকে খুন করে ঘটনাস্থলে ফেলে রাখা হয়। পরে অনুসন্ধানে জানা যায় নির্মমভাবে হত্যার শিকার মো. মামুন (৩২) নওগাঁ সদর উপজেলার কুমুড়িয়া জবার মোড় এলাকার মৃত আলেপ উদ্দিনের ছেলে। তিনি পার্টনারশিপে সিমেন্ট দিয়ে ঘরের খুঁটি তৈরির ব্যবসা করে আসছিলেন।

শনিবার একই গ্রামের ট্রাকচালক দুলালের ছেলে সুমনের (২৭) ট্রাকে সিমেন্টের তৈরি খুঁটি সরবরাহ করতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় যান। ওই ট্রাকের হেলপার হিসেবে তাদের সঙ্গে ছিল পাশের উল্লাশপুর গ্রামের ছানার ছেলে সজিব (২৫)। খুঁটিগুলো যথাস্থানে পৌঁছে দিয়ে বিক্রিত ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা নিয়ে যথারীতি বাড়িতে ফিরে আসছিল। রাত ১২টার পর যেকোনো সময় নওগাঁ-রাজশাহী সড়কের ভীমপুর মৌজায় চালক সুমন ও হেলপার সজিব ধারালো অস্ত্র ও হাতুড়ি দিয়ে মুখ, চোখসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে মামুনকে নির্মভাবে খুন করে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে বাড়িতে চলে আসে।

এদিকে সুমন ও সজিব বাড়িতে এলে সুমনের বিধবা মা তাদের জিজ্ঞাসা করে যে সুমন কোথায়। তারা সদুত্তর দিতে পারে না। বিষয়টি প্রতিবেশীদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করে। স্থানীয় ইউপি সদস্য রুবেল হোসেন ওই দুজনকে ডেকে জানতে চান। কিন্তু কথাবার্তা অসংলগ্ন হওয়ায় তিনি সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ ফয়সাল বিন আহসানকে অবহিত করেন। সদর থানার পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসা করলে তারা হত্যার কথা স্বীকার করে। পুলিশ তাদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারে যে ঘটনাস্থল মহাদেবপুর থানার অন্তর্গত। বিষয়টি মহাদেবপুর থানাকে জানানো হয়।

মহাদেবপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়ব্রত পাল, অফিসার্স ইনচার্জ মোজাফ্ফর হোসেন ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহালসহ যাবতীয় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠান। চালক সুমন ও হেলপার সজিবকে গ্রেপ্তার করে মহাদেবপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে এই ঘটনার প্রায় ২ ঘণ্টা আগে শনিবার রাত ৯টায় নওগাঁ-সান্তাহার সড়কে ইয়াদ তালপুকুর নামক স্থানে হেলমেট ও মাস্ক পড়ে ৫-৭ জনের একটি সন্ত্রাসী দল কামাল আহমেদ নামের এক বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

এ সময় কামাল আহম্মেদ সান্তাহার থেকে অটোরিকশায় করে বাড়ি ফিরছিলেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তিনটি মোটরসাইকেল হেলমেট ও মাস্ক পড়া ৬-৭ জন সন্ত্রাসীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। মারাত্মক আহত অবস্থায় নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কামাল আহম্মেদ শহরের রজাকপুর মহল্লার মমতাজ আলীর ছেলে। তিনি নওগাঁ পৌসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং ট্রাক বন্দোবস্তকারী সমিতির সাবেক সভাপতি।

নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ বলেছেন এখন পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডের কোনোরকম যোগসূত্র পওয়া যায়নি। তবে সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হত্যাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password