হৃষ্টপুষ্ট একটি লিভারের দাম পড়বে প্রায় দেড় লক্ষ ডলার (১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকার কাছাকাছি)। ভাল মানের কিডনি অবশ্য তার কিছুটা কমেই পাওয়া যাবে চোরাই বাজারে। অস্ট্রেলিয়ার নিউজ ডটকম ডট এইউ নামের একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন জানা যায়, আন্তর্জাতিক চোরাই বাজারে বিক্রি হওয়া ওই সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বড় অংশের মালিক চীনের বন্দিশিবিরে আটক হতভাগ্য উইঘুর মুসলিমরা।
দীর্ঘদিন ধরেই চীনের বিরুদ্ধে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসরত উইঘুর মুসলিমদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এমনকি উইঘুর মুসলিমদের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চোরাবাজারে বিলিয়ন ডলারে বিক্রি করা হচ্ছে বলে সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। বন্দিশিবিরে আটক উইঘুর মুসলিমদের পাশাপাশি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী তিব্বতি এবং ফালুন গং গোষ্ঠীর বন্দিদের থেকেও জোর করে অঙ্গ সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে ওই প্রতিবেদনে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একদলীয় শাসনাধীন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সরকার বেআইনি ভাবে বছরে অন্তত ১০০ কোটি ডলারের ( বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা) অঙ্গপ্রত্যক্ষের ব্যবসা চালাচ্ছে। চলতি বছরের শুরুতে কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা চীন সরকারদের বিরুদ্ধে উইঘুর, তিব্বতি এবং ফালুন গং বন্দিদের অঙ্গ কেটে বিক্রির অভিযোগ তুলেছিল। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।
চীনের বিভিন্ন বন্দিশিবিরে আনুমানিক ২০ লক্ষ তুর্কিভাষী উইঘুর মুসলিমকে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন অভিযোগ তুলেছে। যৌনাঙ্গে ইলেকট্রিক শক, নিষিদ্ধ ওষুধ প্রয়োগ, নারী বন্দিদের ধর্ষণসহ বন্দিদের উপর নানা অত্যাচার করা হয় বলে অভিযোগ আছে। চল্লিশের দশকে স্বাধীন রাষ্ট্র পূর্ব তুর্কিস্তান দখল করে শিনজিয়াং প্রদেশ নামকরণ করেছিল চীন। তার পর থেকেই সেখানকার বাসিন্দা উইঘুর মুসলিমদের একাংশ চীনের দখলদারির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন