নিউ ইয়র্ক: বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্পর্কে অসাংগঠনিকভাবে অশালীন ও বিরূপ মন্তব্য করার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ ও আওয়ামী পরিবারের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সময় রবিবার (২১ নভেম্বর) নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের এক রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিত উক্ত প্রতিবাদ সভায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান কর্তৃক মন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্পর্কে অশালীন ও বিরূপ মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান বক্তারা।
আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ বসারত আলীর সভাপতিত্বে এবং প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় বক্তারা উল্লেখ করেন গত ১১ই নভেম্বর স্থানীয় যুবলীগের এক সভায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি কোন কাজ নাই, তিনি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ধ্বংসের জন্য সে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করে কেন্দ্রীয় নেতা ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ সঙ্গে করে নিয়ে জাতিসংসের সাধারন অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন তিনি ৩-৪ টা মিটিং ও সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের সাথে একটা সংঘাত তৈরি করে দেশে ফিরে গেছেন। প্রকান্তরে তিনি বর্তমান সরকার, প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে কটাক্ষ করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিদের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি করেন।
সভায় বিভিন্ন বক্তা ড. সিদ্দিকুর রহমানের এহেন ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বক্তারা আরও বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নিজেই মেয়াদোত্তীর্ণ। সূযোগসন্ধানী ও সূবিধাবাদী বর্ণচোরা প্রকৃতির হাইব্রিড সিদ্দিকুর রহমান কার স্বার্থসিদ্ধির যুক্তরাষ্ট্রে কর্মকান্ড চালাচ্ছেন তা নিয়ে নানা বলে প্রশ্ন তোলেন বক্তারা। ইতিপূর্বে বহুবার তিনি বিভিন্ন সভামঞ্চে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, জননেত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ ও কেন্দ্রীয় নেতা ও সংগঠনের বিরুদ্ধে বিতর্কিত বক্তব্য রাখেন।
টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা ও সেনাবাহিনী সম্পর্কে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি। কয়েক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রস্থ জাসদ, ভাষানী ফাউন্ডেশন, ভাওয়াইয়া সংসদের সভায় উপস্থিত হয়ে তিনি দল ও দেশের বিরুদ্ধে বিতর্কিত বক্তব্য দেন। ১৫ই আগষ্টে সভায় তার স্ত্রী অট্টহাসিতে ফেটে পড়েন। দলের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও কেবিনেট মিনিস্টার আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর ঘরোয়া মিটিংয়ের বক্তব্য প্রেস-মিডিয়ায় হস্থান্তর করে দেশে গৃহযুদ্ধ বাঁধানোর চেষ্টা করেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি-জামাত-ভাষানী ন্যাপের সাথে ওঠাবসা করে দল ও দেশের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন।
তার কার্য্যকলাপ সূস্পস্টভাবে দলের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্তের অংশ বলেই বক্তারা মনে করেন বক্তারা। তার কার্মকান্ড দেখে মনে বক্তারা মনে করছেন দল ক্ষমতাচ্যুত হলে তিনি বিএনপিতে যোগদান করবেন। বক্তারা অচিরেই ড. সিদ্দিকুর রহমানের অপসারণ ও বিচার দাবি করেন। সভায় এ যাবতকালের সকল আয়-ব্যয়ের হিসাব চেয়ে সিদ্দিকুর রহমানের কাছে চিঠি প্রদান এবং সকল অসাংগঠনিক কাজের জন্যে কারণ দর্শাও নোটিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
সকলের যৌথ স্বাক্ষরে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে বিচার চেয়ে শিঘ্রই একটি দরখাস্ত প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সভায় বক্তব্য রাখেন ড. প্রদীপ রন্জন কর, সৈয়দ বসারত আলী, প্রকৌঃ মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, এ্যাড. শাহ মোঃ বখতিয়ার, মিসবাহ আহমেদ, ফরিদ আলম, জালাল উদ্দিন জলিল, শেখ জামাল হোসেন, ইফজাল চৌধুরী, রুমানা আক্তার, মন্জুর চৌধুরী, খন্দকার জাহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, মিসেস খায়রুন চৌধুরী প্রমুখ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন