অপরূপ-সৌন্দর্য্য-‘-রাঙ্গামাটির-ফুরোমন-পাহাড়’

অপরূপ-সৌন্দর্য্য-‘-রাঙ্গামাটির-ফুরোমন-পাহাড়’

পাহাড়ের ওপরে বসে মেঘ ও পাহাড়ের মিতালি দেখতে কে না চায়! এ মিতালি দেখতে প্রতি বছরের এমন শীতের দিনে হাজারো মানুষ ঘুরে বেড়ায় দূর পাহাড়ে। কেউবা বান্দরবানের নীলগিরি, কেউবা রাঙ্গামাটির সাজেক ভ্যালিতে। তবে রাঙ্গামাটি শহরের অদূরের একটি পাহাড়ের চূড়ায়ও এমন মিতালির দেখা মেলে। সেটি হলো ফুরমোন পাহাড়। রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক ও রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের মাঝপথের সাপছড়ি এলাকা দিয়ে পাহাড়টিতে যাওয়া যায়। রাঙ্গামাটি শহর থেকে দীর্ঘদিন পাহাড়টির চূড়া দেখে দেখেই সমুদ্রসম ভালোবাসা জমে গেছে ফুরমোনের প্রতি। ভালোবাসার পরিমাণ ফুরমোনের উচ্চতার কম নয়।

ফুরোমন পাহাড় ভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন রূপ ধারণ করে। কোনো পর্যটক বর্ষায় ফুরোমন পাহাড় ভ্রমণ করলে দেখতে পাবেন চির সবুজ পাহাড়। গ্রীষ্মকালে আসলে রুক্ষ ও শুষ্ক পাহাড় দেখা যাবে। আবার শীত মৌসুমে দেখা মিলবে শিশিরে ভেজা মেঘে ঢাকা আকাশ আর পাহাড়।

ফুরোমন পাহাড়ের অবস্থান রাঙামাটি সদরের সাপছড়ি এলাকায়। পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে দেখা মিলে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের। ফুরোমন পাহাড়ে দুইভাবে যাওয়া যায়। একটি রাঙামাটি সদর উপজেলার শালবাগান এলাকা দিয়ে, অপরটি শুকরছড়ি এলাকা দিয়ে।

পাহাড়ের উচ্চতা ১ হাজার ৫১৮ ফুট। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২ হাজার ৬০০ ফুট উঁচুতে। ফুরোমন পাহাড়ে উঠতে কিছুটা কষ্ট হলেও পাহাড়ে উঠার পরে সব কষ্ট আনন্দে পরিণত হয় বলে জানান স্থানীয়রা।

তানিশা নামের এক পর্যটক বলেন, এর আগে তিন পার্বত্য জেলার অনেক পাহাড়ে ভ্রমণ করেছি। তবে, এবারের অনুভূতি আগের তুলনায় ভিন্ন।

চট্টগ্রামের মীরসরাই থেকে ফুরোমন দেখতে আসা পর্যটক সুমন চৌধুরী বলেন, খুবই চমৎকার পাহাড়। যেখানে আসলে নিজের সব দুঃখ, কষ্ট মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, আমি দেশের সকল ভ্রমণপ্রেমী মানুষদের বলবো, আপনারা একবারের জন্য হলেও ফুরোমন পাহাড়ে ঘুরে যাবেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সবুজ পাহাড়ে গায়ে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা মেঘ। আর পাহাড়ের ভাজে ভাজে অজানা অসংখ্য ফোটা ফুল মনকে শিহরিত করে তুলে।

পর্যটক দীপা বলেন, ফুরোমনে মেঘের লুকোচুরি খেলা সত্যিই অসাধারণ। যে ফুরোমন ভ্রমণ করবেন না, সে জীবনে অনেক কিছু মিস করবেন।

ফুরোমন ভ্রমণে পর্যটকদের একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। তা হলো, এখানে রয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ফুরোমন ভাবনা কেন্দ্র বৌদ্ধ মন্দির। যারা এখানে ঘুরতে আসবেন, তাদের অবশ্যই মন্দিরের ভাবগাম্ভীর্যতা রক্ষা করতে হবে।

হ্রদ পাহাড়ের শহর পার্বত্য জেলা রাঙামাটি। প্রতি বছর শীত মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা এখানে ঘুরতে আসেন প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password