গোড়ালির ব্যথায় গিয়েছিলেন হাসপাতালে বছর ২৫ এর যুবতী জানতে পারলেন তিনি আসলে ছেলে

গোড়ালির ব্যথায় গিয়েছিলেন হাসপাতালে বছর ২৫ এর যুবতী জানতে পারলেন তিনি আসলে ছেলে

সম্প্রতি পূর্ব চিনের জেইঝাং প্রদেশের বছর পঁচিশের এক যুবতী গোড়ালির ব্যথা নিয়ে চেক-আপ করাতে গিয়েছিলেন ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে

বেজিং: পূর্ব চিনের জেইঝাং ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের মেন্টাল হেল্থ সেন্টারের ডেপুটি ডিরেক্টর হু শাওহোয়া ঘটনার নেপথ্যে স্পষ্ট ভাবে দায়ী করছেন দেশের যৌন অশিক্ষাকে। চিনের স্কুলগুলোয় যে ছোট থেকে যৌন শিক্ষা দেওয়া হয় না এবং তার পরিণামে অনেকের জীবন বিপর্যয়ের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়ায়, সেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি।

জানা গিয়েছে যে সম্প্রতি পূর্ব চিনের জেইঝাং প্রদেশের বছর পঁচিশের এক যুবতী গোড়ালির ব্যথা নিয়ে চেক-আপ করাতে গিয়েছিলেন ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে। সেখানে ধারাবাহিক সূত্রে উন্মেচিত হয়েছে এক মর্মন্তুদ সত্য। যুবতী জানতে পেরেছেন যে তিনি কোনও দিনই মেয়ে ছিলেন না! বরং তাঁকে কিছুটা হলেও ছেলে বলা যায়।

কী ভাবে এই সত্যের উন্মোচন হল?

চিনা সংবাদমাধ্যমগুলি বলছে যে প্রথমে স্বাভাবিক নিয়মে ওই যুবতীর পায়ের এক্স-রে করা হয়েছিল। তা পরেই চমকে ওঠেন ডাক্তারেরা। তাঁরা দেখেন যে বয়ঃসন্ধির পর থেকে ওই যুবতীর হাড় এতটুকুও পরিবর্তিত হয়নি। যা একটি অস্বাভাবিক ঘটনা।

সেই সূত্রেই এর পর আরও বেশ কিছু টেস্ট করে দেখা হয়। আর তাতেই সামনে আসে চরম সত্যটি। এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট পরীক্ষা করে দেখেন যে ওই যুবতীর শরীরে হাই ব্লাড প্রেশার, লো ব্লাড পটাসিয়ামের সমস্যা আছে। তাঁরা জানিয়েছেন যে এটি আদতে কনজেনিটাল অ্যাড্রিনাল হাইপারপ্লাসিয়া বা সহজ ভাবে বললে সেক্সুয়াল ডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডারের সমস্যা। ডাক্তারদের বক্তব্য- খুব সম্ভবত ওই যুবতীর মা, বাবা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, যে কারণে তাঁদের সন্তানের জেনেটিক সমস্যা দেখা দিয়েছে।

ডিএনএ টেস্ট করার পরেও এই সত্যটিই প্রতিষ্ঠিত হয়। দেখা যায় যে ওই যুবতীর ক্যারিওটাইপ হল 46 XY। এই রকম জিনের গঠন একমাত্র সেই সব পুরুষদেরই থাকে যাঁদের যৌনাঙ্গ পুরুষের মতো হয় না, আবার নারীর মতোও হয় না। যেমন, এই যুবতীর শরীরে পুরুষ-অঙ্গ, অ্যাডামস অ্যাপল নেই। তেমনই নেই ইউটেরাস বা ওভারিও! শুধু যৌনাঙ্গটির সঙ্গে নারী-অঙ্গের কিছু সাদৃশ্য আছে, এটুকু বলা যায়!

ডাক্তারদের এই প্রসঙ্গে যুবতী জানিয়েছেন যে ছোটবেলা থেকে কোনও দিন তাঁকে মেনস্ট্রুয়াল সাইকেলের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়নি। এ নিয়ে তাঁর মা তাঁকে একবার স্থানীয় এক ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। তিনি পরীক্ষা করে এই মত দেন যে যুবতী অন্যদের চেয়ে আলাদা, তাই তাঁর শরীর পরিণত হতে সময় লাগবে। কিন্তু সেই সময় আর আসেনি, অন্য দিকে লজ্জায় তিনি নিজেও ঘটনাটি চেপে যান।

 

জেইঝাং ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের মেন্টাল হেল্থ সেন্টারের ডেপুটি ডিরেক্টর হু শাওহোয়া তাই বলছেন যে আপাতত ওই যুবতীকেই ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ নির্ধারণ করতে হবে। ঠিক করতে হবে তিনি পুরুষ হিসেবে জীবন কাটাতে চান, না কি আগের মতোই নারীর জীবন যাপন করতে চান!

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password