কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশজুড়ে সহিংসতার মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা অবশেষে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার পর থেকে আবার চালু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ইন্টারনেটের গতি বেশ ধীরগতির হলেও ব্রডব্যান্ড সংযোগ ফিরে আসায় ফ্রিল্যান্সার, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও সাধারণ ব্যবহারকারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।
এর আগে আজ রাতেই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করার আশ্বাস দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাঈদ আহমেদ পলক। বিকেলে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, ব্যাংকিং, ফ্রিল্যান্সিংসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে রাতের মধ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু হবে।
প্রাথমিকভাবে ইন্টারনেটের গতি বেশ ধীরগতির হলেও দীর্ঘ ৫ দিন পর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ ফিরে আসায় ব্যাংকিং খাত থেকে শুরু করে ফ্রিল্যান্সিং, ই-কমার্সসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সেবাসমূহ অচিরেই স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এছাড়া দেশজুড়ে চলমান টানা কারফিউতে ধুঁকতে থাকা তৈরি পোশাক শিল্পসহ রপ্তানিমুখী খাতগুলোতেও ইন্টারনেট ফিরে আসার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ইন্টারনেট না থাকায় রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের বিদেশি গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষায় সমস্যায় পড়ে। ব্রডব্যান্ড সংযোগ ফেরায় তাই অনেকটাই স্বস্তিতে এই প্রতিষ্ঠানগুলো।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশজুড়ে সহিংসতার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার পর থেকে দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায়। সেদিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর মহাখালীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগে পুড়ে যায় ৩টি ডেটাসেন্টার, যেগুলোর ওপর নির্ভর করে দেশের ৬০ শতাংশ ব্যান্ডউইথ। এভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হলে রাত থেকেই সারা দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
তারও আগে বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা থেকেই মোবাইল ফোনের ইন্টারনেট সংযোগেও সমস্যা দেখা দেয়। প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে প্রবেশ করা যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে রাত থেকে মোবাইল ফোন-ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
ইন্টারনেট না থাকায় বিপাকে পড়েছিলেন দেশের ১৪ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী।
বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সারদের মতো পেশাজীবীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সফটওয়্যার খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বেসিস জানায়, ইন্টারনেট সংযোগের অভাবে শুধু সফটওয়্যার খাত থেকেই দৈনিক লোকসান ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা। এছাড়া ফ্রিল্যান্স খাতে মোট ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ কোটি ডলার। পাশাপাশি রয়েছে ক্লায়েন্ট হারানোর শঙ্কাও।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন