সালথায় হত্যা পরবর্তী সহিংস্রতা: পুলিশ পরিচয়ে নিরবে চাঁদাবাজির অভিযোগ

সালথায় হত্যা পরবর্তী  সহিংস্রতা: পুলিশ পরিচয়ে নিরবে চাঁদাবাজির অভিযোগ

ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের নারানদিয়া গ্রামে হত্যা পরবর্তী সহিংস্রতায় পুলিশ পরিচয়ে গভীর রাতে দরজা খুলে মালামাল লুটের অভিযোগ রয়েছে। ইজ্জত হারানোর ভয়ে আতঙ্কিত নারীরা, অনিরাপদে বয়স্ক ও শিশুরা।

ভুক্তভোগী অনেকেই অভিযোগ করেছেন (যাহা প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত) জানা গেছে, গত শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রাম্য দু-দলের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাতে মারা যায় নারানদিয়া গ্রামের মোহাম্মদ মাতুব্বর (৬৫) নামের প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ।

এই ঘটনায় নিহতের ভাতিজা নুরুল ইসলাম মাতুব্বর বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন সালথা থানায়। এরপর থেকেই আসামীরা পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাদের কে ধরতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আসামী পক্ষ পলাতক থাকায় এবং পুরুষ মানুষ বাড়িতে না থাকা এই সুযোগে কিছু অসাধু লোক আসামীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে।

এমনকি ২ /৩ লক্ষ টাকা প্রতি পরিবার থেকে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে এবং দলে ভেড়ার চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ভুক্তভোগি নারানদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আফজাল মোল্যার স্ত্রী সুফিয়া বেগম জানান, তাদের বাড়িতে গতকাল শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) গভীর রাতে ১০/১২ জনের একটি দল উঠানে দাড়িয়ে ডাকতেছে যে বাড়িতে কেউ আছেন। তখন আমরা ভিতর থেকে তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা পুলিশের লোক বলে পরিচয় দেয়।

ঘরের দরজা খুলার সাথে সাথে হুড়মুড় করে ১০/১২ জন ঘরের মধ্যে ডুকে ড্রয়ারের টাকা গাঁয়ের অলংকার জোর করে খুলে নিয়ে যায়। আমি বাঁধা সৃষ্টি করলে তক্তা দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে আমাকে। একই গ্রামের হাচেন মাতুব্বরের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, আমাদের দেশীয় হাঁসের খামার থেকে প্রায় ২ শত হাঁস জোরপূর্বক নিয়ে যায় এবং গরুর ঘরে গিয়ে গরু ছেড়ে দিলে আমরা চিৎকার দেই।

পরে তারা গরু রেখে হাঁস নিয়ে চলে যায়। প্রায় প্রতিরাতেই দল বেধে প্রত্যেক আসামীর বাড়ি হানা দেয়। মহিলারা ঘর থেকে বের হতে পারে না। সম্ভ্রাম হারানোর ভয়ে তারা এখন আতঙ্কিত। ছোট ছোট শিশুরা আতঙ্কিত । এ ব্যাপারে আর এক ভুক্তভোগি একই গ্রামের জালাল মাতুব্বর এর স্ত্রী চায়না বেগম সালথা থানায় ১৯ জন কে আসামী করে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।

তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, তার কাছে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং দলে মিশতে চাঁপ সৃষ্টি করে। পরে তিনি তাতে রাজি না হলে বসত ঘরের যাবতীয় মালামাল লুটপাট করে করে নিয়ে যায়। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, তার প্রায় এক লক্ষ টাকার মূলের মালামাল লুট হয়ে যায়। ভুক্তভোগি অনেকেই বলছে হত্যা মামলার বাদী নুরুল ইসলামের এর নেতৃত্বে এই সব লুটপাট চালাচ্ছে তাই দলের লোকজন।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে নুরুল ইসলাম বলেন, আমার চাচাকে ওরা হত্যা করেছে আমি এই হত্যার বিচার চাইছি মাত্র। আমি বা আমার দলের কোন লোক কোন আসামীর বাড়িতে যাচ্ছে না। কারো বাড়ি হামলাও করছে না। পরিবেশটাকে ঘোলাটে করতে তৃতীয়কোন পক্ষ হয়তো এটা করছে। সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ আসিকুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password