প্রেম করতে না চাওয়ায় শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে কর্মরত পপি নামে এক ইন্টার্ন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টকে উত্যক্ত ও মারধর করেছে আরাফাত নামে এক বখাটে ও তার সঙ্গীরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের সামনের সড়ক ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ ইন্টার্ন শিক্ষার্থীরা। এরপর বখাটে আরাফাতকে আটক করে পুলিশ।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সাইক মেডিকেল ইনস্টিটিউটের ম্যাটসের শিক্ষার্থী পপি আক্তার বেশ কিছুদিন ধরে জেলা সদর হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ করছিলেন। শহরের নারায়ণপুরের আরাফাত নামে ওই যুবক পপিকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করছিল। এর প্রতিবাদ করায় বুধবার দুপুরে পপির বন্ধু নাজমুল ইবনে হাফিজকে পিটিয়ে আহত করে আরাফাত ও তার বন্ধু হালিম-রনিসহ কয়েকজন। ওই সময় নাজমুলকে হত্যার হুমকিও দেয় তারা। খবর পেয়ে পপি ও নাজমুলের সহপাঠীরা হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বখাটে আরাফাতকে আটক করে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী পপি আক্তার বলেন, আরাফাত ফোন দিয়ে থ্রেড করত। তার সঙ্গে কথা বলতে হবে, প্রেম করতে হবে। আমি বলেছি- ‘আমার বিয়ে হয়ে গেছে।’ সে বলত- ‘বিয়ে হয়ে গেছে তো কি হয়েছে। জামাই তো আর তোর সঙ্গে থাকে না। আমার সঙ্গে এখন প্রেম কর।’ সে হুমকি দিয়ে বলত- আমার সঙ্গে সখ্যতা না রাখলে শেরপুর থাকতে পারবি না। তোর বাড়ি কুষ্টিয়াতে চলে যা। পপি আরো বলেন, আমি ডিউটিতে থাকাকালীন আরাফাত হাসপাতালেও উপস্থিত হয়। মাঝেমধ্যেই আমাকে মারতে আসে। আমার সহপাঠীরা সঙ্গে থাকায় কিছু করতে পারে না। সে আমাকে প্রায়ই গালিগালাজ করে।
রাস্তা দিয়ে যাওয়া-আসার সময় আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকে। বাড়ির সামনেও দাঁড়িয়ে থাকে। আমি একদমই নিরাপদ না। পপির সহপাঠী নাজমুল ইবনে হাফিজ বলেন, পপিকে ডিস্টার্ব করত আরাফাত। সে আমার কাছে পপির মোবাইল নম্বর চায়। আমি নম্বর না দিলে নাকি সে পপিকে হাসপাতাল তুলে নিয়ে যাবে। ভয়ে আমি তাকে নম্বর দেই। এরপর থেকে আরাফাত আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। পরে বিষয়টি সিভিল সার্জন স্যারের মাধ্যমে পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে ওইদিন আরাফাতকে পায়নি।
নাজমুল আরো বলেন, পুলিশ আসার খবর পেয়ে আরাফাত এসে আমাকে হুমকি দেয়। সে বলে- ‘পুলিশ কি করবে, ওরা তোদের কত দিন দেখে রাখবে। যদি আমাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় তো দুইদিন পর বের হয়ে এসে তোকে খুন করব।’ এরপর আরাফাত ও তার সঙ্গীরা আমাকে মারধর করে। শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. খাইরুল কবীর সুমন ও সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এসব ঘটনা ও বখাটে আরাফাতের আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন