১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর সভাপতিত্বে অন্যান্য উপদেষ্টাদের সাথে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের জন্য শোক প্রস্তাব গ্রহণের পাশাপাশি গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও শহীদ পরিবারকে সহায়তা দিতে সভায় নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিলের বিষয়টি উপদেষ্টামণ্ডলীর বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। এ ছাড়া বৈঠকে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আত্মোৎসর্গকারীদের উদ্দেশে শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
আজ বিকেল থেকেই ১৫ আগস্টের সরকারি ছুটি না রাখার আভাস মিলছিল। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে মঙ্গলবারই (১৩ আগস্ট) প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। কোনো কারণে প্রজ্ঞাপন জারি না হলে আগামীকাল হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিলের প্রজ্ঞাপন তারা প্রস্তুত রেখেছেন।
এর আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও সরকারি ছুটি বাতিলের পরামর্শ দিয়েছে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। গতকাল সোমবার বিকেল ৪ টায় ড. ইউনূস বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে আলোচনা শুরু করেন। এরপর একে একে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
১৫ আগস্টের বিষয়ে দলগুলোর মতামত জানতে চাইলে একমাত্র বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ ১৫ আগস্ট শোক দিবস পালনের পক্ষে মত দেন। তিনি বলেছেন, ১৫ আগস্ট সর্বজনীন। যতটুকু শ্রদ্ধা পাওয়া উচিত, ততটুকু শ্রদ্ধাই যেন পায়। তবে ১৫ আগস্ট মাঠে প্রচুর পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন থাকবে। কেউ যাতে কোনো ধরনের গণ্ডগোল করতে না পারে তা নজরদারি করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের নিজ বাসায় সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে সপরিবারে নিহত হন। সেদিন তিনি ছাড়াও নিহত হন তার স্ত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।
এ ছাড়া তাদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনসহ নিহত হন আরো ১৬ জন। ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল তখন দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়েছিল। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় এসে ২০০২ সালে জাতীয় শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে। ছয় বছর পর হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পুনর্বহাল করে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন