গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক মো. মাসুদ রানার বাড়ি থেকে ব্যবসায়ী হাসান আলীর লাশ উদ্ধার ঘটনার একদিন পর মামলা নিয়েছে পুলিশ। মামলায় মাসুদ রানা ছাড়াও স্থানীয় ব্যবসায়ী রুমেন হক ও খলিলুর রহমান বাবুকে আসামি করা হয়েছে। তবে আসামি রুমেন ও বাবু পলাতক থাকলেও প্রধান আসামি মাসুদ রানাকে চারদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে সদর থানায় মামলা রুজুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাফুজার রহমান। তিনি জানান, হাসান আলীর স্ত্রীর দেয়া লিখিত এজাহার মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, অপারেশন) মো. সেরাজুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার প্রধান আসামিকে চারদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মামলার পলাতক আসামি রুমেন ও বাবুকে গ্রেফতারে পুলিশের তৎপরতা চলছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেরাজুল ইসলাম জানান, বিকেলে মামলার প্রধান আসামিকে মাসুদ রানাকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। কিন্তু শুনানি শেষে আদালতের বিচারক চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ইতোমধ্যে মামলার তদন্ত কাজ শুরু করাসহ পলাতক আসামি রুমেন ও বাবুকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে, শনিবার দুপুরে হাসান আলীর লাশ উদ্ধার ঘটনার পরেই তার স্ত্রী বাদি হয়ে সদর থানায় তিনজনকে আসামি করে এজাহার দায়ের করেন। এদিকে, রোববার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং ব্যবসায়ী হাসান আলীর মৃত্যুর পুরো ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল ইসলাম।
এছাড়া অভিযুক্ত মাসুদ রানাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে জেলা আ’লীগের উপ-দফতর সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। রোববার দুপুরে গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
অপরদিকে, ব্যবসায়ী হাসান আলীর মৃত্যুর ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে জেলার ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। ঘটনার বিচার ও জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবিতে রোববার দুপুরে শহরের ডিভি রোডে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ব্যবসায়ীরা। এতে নিহতের স্বজন ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষও অংশ নেয়।
প্রসঙ্গত শনিবার দুপুরে (১০ মার্চ) সদর উপজেলার বল্লমঝার ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের (খানকাহশরীফ) এলাকার বাড়ি থেকে থেকে হাসান আলীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় অভিযুক্ত মাসুদ রানাকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করে স্থানীয় জনতা। মাসুদ রানা সদর উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে। গত ৫ মার্চ হাসান আলীকে অপহরণ করে নিজ বাড়িতে নিয়ে আটক করে রাখে মাসুদ রানা। পরে গত ১৫ মার্চ পরিবারের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ হাসান আলীকে উদ্ধার করে সদর থানায় নিয়ে আসে। কিন্তু পুলিশ মাসুদ রানার পক্ষে প্রভাবিত হয়ে আবারও তার জিম্মায় হাসান আলীকে তুলে দেয় সদর থানা পুলিশ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন