ঝালকাঠির রাজাপুর শহরে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ফাটল ধরার ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে ইঞ্জেনিয়ারদের ম্যানেজ করে নিন্মমানের মালামাল দিয়ে এ নির্মাণ কাজ করানো হয়েছে বলে জনমনে নানা প্রশ্নের দেখা দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় উপজেলা সদরের খাদ্য গুদামের পাশে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের কাজ শেষ হওয়ার আগেই ৮/১০টি স্থানের দেয়ালে ফাটল ও জোড়াতালির ঘটনায় জেলা গণপূর্ত বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধিনও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্দোগে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রতিটি মসজিদ ভবনের ১৩ কোটি টাকা প্রাক্কলন ব্যয় ধার্য করলে রাজাপুর উপজেলার মডেল মসজিদটি নির্মাণ দায়িত্ব পায় বরিশালের মেসার্স খান বিল্ডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
রাজাপুর উপজেলার স্থানীয় বাসিন্ধা মনির হোসেন, কামরুল ইসলাম দুলাল, খোকন তালুকদারসহ বেশ কয়েকজন বাসিন্ধা জানায়, নির্মাণ কাজেরশুরু থেকেই নিম্ন মানের মালামাল ব্যবহার ও দায়সারা কাজের অভিযোগে স্থানীয়দের প্রতিরোধে মুখে সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে সঠিকভাবে মান বজায় রেখে কাজ করার শর্তে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুনরায় কাজ শুরু করেন।
বর্তমানে মসজিদের কাজ প্রায় শেষ পর্যায় আসলে স্থানীয় সাংবাদিকরা দেখাতে গিয়ে মসজিদের উত্তর ও দক্ষিন দেয়ালের ভিতর ও বাহিরের বিভিন্ন অংশের ৮/১০টি স্থানে বড় বড় ফাটল দেখতে পায়। তারাএখোনই দেয়ালে দেয়ালে এতো ফাটল কেন জানতে চাইলে সাংবাদিকরা চলে যাওয়ার পর উক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাটলগুলো জোড়াতালি দিয়ে মেরামতের চেষ্টা চালায়।
স্থানীয় বাসিন্ধারা আরো জানায়, মসজিদের মূল অংশের পাইলিংঠিক থাকলেও পেছনের অংশে ঠিকভাবে পাইলিং না করার কারণে দেওয়াল মাটির মধ্যে ডেবে গিয়ে বড় ফাটল সৃষ্টি হলেও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে জোড়া তালি দিয়ে কাজ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।
নির্মাণ কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলী ও উপ বিভাগীয় প্রকৌশলীর অনিয়ম ও অবহেলার কারণেই মসজিদের নির্মাণকাজ শেষ হতে না হতেই ফাটল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ মসজিদের বিষয়ে ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগের সাইট ইঞ্জিনিয়ার আবুল বাশার লিটন বলেন, এ্যাংকর সিমেন্ট একটু বেশি কড়া। তাই পর্যাপ্ত পানির অভাবে দেয়ালের প্লাষ্টারে ফাটল দেখা দিয়েছিল। ইতোমধ্যে তা ঠিক করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী বাদল কুমার মন্ডল বলেন, দুইদিন আগেও কাজের সাইট থেকে ঘুরে এসেছি, ভবনের দেয়ালে ফাটলের কোন ঘটনা চোখে পড়েনি। তবে এখন বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন