মিয়ানমারে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দিন দিন আরও জোরালো হচ্ছে। সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে ইন্দোনেশিয়ার প্রচেষ্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলির প্রস্তাবিত কূটনৈতিক সফর বাতিল হওয়ায় আবারও ফুঁসে উঠেছে মিয়ানমারবাসী। বুধবার সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আরও বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন তারা।
এর আগে, মঙ্গলবার বিক্ষোভে লোকজনের উপস্থিতি একটু কম ছিল। তবে ইয়াঙ্গুনের বাণিজ্যিক কেন্দ্রে বিভিন্ন জাতিগত সংখ্যালঘু সদস্যদের একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বেসামরিক কর্মচারীরাও এতে যোগ দিয়েছিলেন।
কাচিন সম্প্রদায়ের সদস্য ২৬ বছর বয়সী সান অং লি বলেন, আমরা আমরা সংখ্যালঘুরা অধিকার আদায়ের সুযোগ পাইনি। আমরা এখন দাবি জানাচ্ছি।
টানা বিক্ষোভ ও আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়েছে মিয়ানমার। এ অবস্থার পরিবর্তন আনতে আলোচনা করতে চেয়েছিল ইন্দোনেশিয়া।
সূত্র জানিয়েছে, জেনারেলরা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তাদের প্রতিশ্রুতি রাখছে কিনা তা দেখতে পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস'র (আসিয়ান) সদস্যরা। কিন্তু মিয়ানমার এ প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। এরপর মঙ্গলবার শত শত বিক্ষোভকারী ইয়াঙ্গুনে ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসের বাইরে নভেম্বরে দেওয়া ভোটের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান।
মিয়ানমারে গত ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। তবে এনএলডি নিরঙ্কশ জয় পেলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। তারা নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে ওইদিন ভোরে সু চি ও দেশটির প্রেসিডেন্টসহ এনএলডির শীর্ষ বেশ কিছু নেতাকে গ্রেপ্তারের পর এক বছরের জন্য মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের পর গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও গ্রেপ্তার নেতাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে সাধারণ মানুষ।
এরই মধ্যে সু চির রিমান্ডের মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন অভিযোগ এনে আটকে রাখা হয়েছে তাকে। মঙ্গলবার সামরিক জান্তার পক্ষ থেকে নতুন নির্বাচনের আশ্বাস দেওয়া হলেও তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।
সুত্রঃরয়টার্স
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন