ঢাকার ধানমন্ডিতে ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে রিয়া আক্তার (১৩) নামে এক কিশোরী গৃহকর্মীকে হত্যার অভিযোগে আদালতের নির্দেশে ৩ বছর পর তার মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌস আরার উপস্থিতিতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের মণ্ডল-তলী গ্রামের রিয়ার নানার বাড়ির কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
পরে ফরেনসিক বিভাগে পাঠায় ডিবি পুলিশ। সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার একটি বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে নিহত হয় গৃহকর্মী রিয়া। এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। ওই মামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এতে নারাজি দিয়ে ওই কিশোরীর মা কুলসুম বেগম তার মেয়েকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয় বলে দাবি করেন।
পরে ঢাকা এমএম আদালত নং-৮ গত ১ মে ডিএনও পরীক্ষার জন্য মরদেহ উত্তোলনের আদেশ দেন। নিহত রিয়া জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জের ভ্যানচালক রাজু আহমেদের মেয়ে। তারা গাজীপুরের টঙ্গীর আউচপাড়া এলাকা বসবাস করতেন। এখনো তার বাবা-মা আউচপাড়া বসবাস করেন। রিয়া টঙ্গী আউচপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তার নানার বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। নিহতের পরিবার জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের ৩ আগস্ট রিয়া ও শিমলা নামে দুই কিশোরীকে গৃহকর্মীর কাজের কথা বলে ধানমন্ডির ৯১ নম্বর বাসায় নিয়ে যায় তাদের পূর্ব পরিচিত জাকির হোসেন।
একই বছরের ১৬ আগস্ট ভোরে একটি প্রাইভেটকারে কয়েকজন ব্যক্তি গিয়ে রিয়া অসুস্থ বলে পরিবারকে জানায়। পরে বাসায় গিয়ে দেখে রিয়া মারা গেছে। এ সময় বাসার মালিক মমিনুল ১০ম তলা বিল্ডিংয়ের বেলকুনি দিয়ে শাড়ি বেয়ে নামার সময় রিয়া পড়ে মারা গেছে বলে জানান। পরে একটি কাগজে সই নিয়ে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। পরের দিন লক্ষ্মীপুর সদরের হামছাদী এলাকায় নিহতের নানার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।
নিহতের মা কুলসুম বেগম বলেন, ন্যায়বিচারের স্বার্থে মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেছি। মামলাটি পিবিআই ২০২১ সালের ৭ জুলাই তদন্তের দায়িত্ব নেয়। তদন্তকালে বিভিন্ন সাক্ষী, জবানবন্দি, ঘটনাস্থলের বিভিন্ন ফুটেজ সংগ্রহ করে আদালতে চলতি বছরের ৩ মার্চ পিবিআই প্রতিবেদন দাখিল করে।
মামলার চলমান প্রক্রিয়ায় প্রতিবেদন উপযুক্ত মনে না করায় আদালত মামলাটি ডিএনএ পরীক্ষা করার জন্য ডিবিকে লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছেন। লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌস আরা জানান, মামলার তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এটি ময়নাতদন্ত করা হবে। পরে ফের মরদেহ দাফন করা হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন