বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্ব ঘোষিত গণমিছিল কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে অন্তত ৩০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ছয়জন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বেশ কয়েকজনকে চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়েছে। তাদের মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহান ও কুমিল্লা সরকারি কলেজের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সৌরভের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সৌরভের চোখে গুলি লেগেছে।
সোহানকে কোপানো হয় চাপাতি দিয়ে। হামলাকারীরা কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহারের অনুসারী বলে জানা গেছে। শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে কুমিল্লা নগরীর পুলিশ লাইনস এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার সকাল ১০টার দিকে কুমিল্লা জিলা স্কুলে সামনে গণমিছিল পালন করতে আসেন শিক্ষার্থীরা। এসময় মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিউমার্কেট সড়কে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। পরে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ফৌজদারি হয়ে পুলিশ লাইনসের দিকে গেলে সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর ইটপাটকেল ও গুলিবর্ষণ করতে থাকেন। আহতদের উদ্ধার করে কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গুলিবিদ্ধদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় প্রাণ বাঁচাতে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে অনেক নারী শিক্ষার্থী দৌড়ে গিয়ে পুলিশ লাইনসের ভেতর আশ্রয় নেন। পরে তাদের পুলিশ ভ্যানে করে ওই এলাকা থেকে উদ্ধার করা করা হয়।
এর আগে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণভাবে চলে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। পেছন থেকে হামলা করে বাহারের অনুসারীরা। তারা শটগান, রিভলভার, চাপাতি নিয়ে কুমিল্লার কান্দিরপাড়, রানির দিঘি, লিবার্টি চত্বর, ফৌজদারি, পুলিশ লাইন ও বাগিচাগাঁওয়ে অবস্থান নেন।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তারা কেউই ফোন না তোলায় কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে চান্দিনায় এসিল্যান্ডের গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। আন্দোলনকারীরা কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন