জমি লিখে দিলেই বৃদ্ধ মা-বাবার দেখাশোনা করতে রাজি সন্তানরা

জমি লিখে দিলেই বৃদ্ধ মা-বাবার দেখাশোনা করতে রাজি সন্তানরা

বসত ভিটে ও গাছপালা বিক্রি করে না দেওয়ায় বৃদ্ধ বাবা-মাকে পালাক্রমে মুগুড় দিয়ে পিটানো ছাড়াও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে এক ছেলে পিটায় ও অন্যরা মানসিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার থানায় অভিযোগ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নালিশ করেছেন ওই বৃদ্ধ দম্পত্তি। পরে ইউএনও পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলেও সন্তানেরা পালিয়ে যায়। এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ফানুর গ্রামে।

স্থানীয় সূত্র ও লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ওই গ্রামের আব্দুল আজিজ শেখ (৭৫) ও হালিমা খাতুন (৭০) দম্পত্তির রয়েছে ৫ ছেলে ও ২ মেয়ে। সকল ছেলে মেয়েই বিয়েসাদী করে আলাদা বসবাস করছেন। এ অবস্থায় বাবা-মা বসবাস করে যে ভিটেতে তা এবং গাছপালা ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র বিক্রি করে টাকা ভাগ ভাটোয়ারা করে দেওয়ার জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে চাপ দিয়ে আসছেন। তাদের কথা না মানায় বৃদ্ধ বাবা-মাকে ভরপোষণও প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন অনেকেই।

বৃদ্ধ বাবা আব্দুল আজিজ শেখ জানান, দুই মেয়ে ও পাঁচ ছেলের মধ্যে এক ছেলে ভর-পোষণ করে আসলেও বড় ছেলে হযরত আলীর কথায় এখন আর তাদের দেকভাল কেউ করে না। শর্ত জুড়ে দেয় তারা যেখানে বসবাস করছে সেই ভিটে ও সকল কিছু বিক্রি করে তাদের ভাগ করে দিলেই তারা পালাক্রমে দেখ-ভাল করবে। তখন আর কোনো অসুবিধা হবে না। কিন্তু এ ধরনের কথায় তিনি রাজি না হওয়ায় ছেলে হযরত মাঝে মধ্যে দুইজনকেই মুগড় দিয়ে পেটায়। আর অন্য ছেলেরা গালাগালি করে অনেকে সময় টেনে-হিঁচড়ে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলে। তাছাড়া নিজের ফসলি জমি থেকে যা উৎপাদন হয়েছিল তাও দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

এতে বেশ কিছু দিন ধরে অনাহারে অর্ধাহারে থাকতে হচ্ছে তাদের। সমাজের লোকজনকে বিচার দিলেও কোনো কাজে আসেনি। এ অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেনের কাছে এসে মৌখিকভাবে নালিশ করেন ও পরে থানায় সন্তানদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন জানান, নালিশ পেয়ে তিনি পুলিশসহ বৃদ্ধ দম্পত্তির বাড়িতে যান। খবর পেয়ে সকল ছেলে মেয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও এলাকার লোকজনকে দায়িত্ব দেন সন্তানদের ডেকে এনে বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেকবাল ছাড়া ভর-পোষণ করার জন্য। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. আব্দুল কাদের মিয়া সন্তানদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, একজন অফিসারকে দিয়ে তদন্ত করে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password