ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় করোনাভাইরাসের ওষুধ আবিষ্কারক বলে দাবিদার শাহীন মিয়াকে (২২) ভ্রাম্যমাণ আদালত ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে তার সহযোগী হিসেবে তার বাবা জসীমকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
তাদের দু’জনের বাড়ি উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের খামারগাঁও গ্রামে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের এই দণ্ডাদেশ দেন।
এদিকে, শাহিন মিয়া দাবি করেন, গত সোমবার তিনি সারা দিন স্বপ্ন দেখেন। দিন শেষে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর ওষুধের ফর্মুলার পুরোটাই স্বপ্নে জানতে পারেন। এ বিষয়টি নিয়ে তিনি তার বাবা জসীম উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলেন। আবিষ্কারের বিষয়টি তিনি অনুষ্ঠান করে প্রকাশ করবেন বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু সব ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ থাকায় তিনি তা করতে পারেননি।
এরপর আজ শুক্রবার খামারগাঁও ব্যাপারীবাড়ির মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের সামনে গিয়ে তার করোনা ঠেকানোর ওষুধ আবিষ্কারের বিষয়ে প্রচার চালান। তিনি আরও বলেন, তার আবিষ্কার করা ওষুধ মুসলিম ছাড়া অন্য ধর্মের লোকেরা খেলে মৃত্যু হবে। যদি সে মুসলিম হয়ে ওষুধ খায়, তাহলে তার কিছুই হবে না।
চানাচুর কারখানায় ভারী বস্তা টানার কাজ করা শাহীন মিয়া বলেন, কারখানায় কাজ করার সময় কিছু কিছু স্বপ্ন দেখেন। প্রায় ১৫ দিন আগে নিজ বাড়িতে আসার পর পুরো স্বপ্ন দেখে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রতিষেধক হিসেবে ওষুধটি আবিষ্কার করতে সক্ষম হন। এখন তিনি সরকারের সঙ্গে চুক্তি করার অপেক্ষায় আছেন। চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর তিনি ওষুধ উৎপাদনে যেতে পারবেন।
শাহীন মিয়া আবিষ্কার ও সরকারের সঙ্গে চুক্তি করতে চাওয়ার বিষয়টি গ্রাম থেকে উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুর রহিম সুজন ঘটনাস্থলে গেলে শাহীন তার ওষুধ আবিষ্কারের কথা ও মসজিদে গিয়ে তার ওষুধের পক্ষে প্রচার চালানোর কথা অবলীলায় স্বীকার করেন। জুমার নামাজের সময় মসজিদে উপস্থিত একাধিক মুসল্লি প্রচার চালানোর সত্যতা নিশ্চিত করেন।
পরে সেখানে আদালত পরিচালনা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে শাহীন ও তার বাবাকে দণ্ড প্রদান করা হয়। ঘরের ভেতর একটি হাঁড়িতে রাখা কিছু তরল ধ্বংস করা হয়। এ সময় আদালতের নির্দেশে এক বোতল তরল জব্দ করে পুলিশ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন