গা-ঢাকা দিয়েছে অস্ত্রবাজ ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আ. লীগ নেতাকর্মীরা

গা-ঢাকা দিয়েছে অস্ত্রবাজ ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আ. লীগ নেতাকর্মীরা

গত ৪ আগস্ট বিভিন্ন অলিগলিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে। ফেনীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও জনতার ওপর ব্যবহার করা হয়েছে ভারী অস্ত্র ও প্রাণঘাতী বুলেট। এগুলোর নির্বিচার ব্যবহারে ঝরে গেছে অনেক তাজা প্রাণ। ওই সব নেতারা এখন গা-ঢাকা দিলেও অস্ত্র হাতে তাদের ভিডিও ফুটেজ এখন সবার হাতে হাতে ঘুরছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এতে আতঙ্কে রয়েছেন শহরের বাসিন্দারা।

এসব অস্ত্রধারীর মধ্যে রয়েছেন- জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি জিয়া উদ্দিন বাবলু, কাজীরবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফর রহমান খোকন হাজারী। এর আগেও বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের অস্ত্রের মহড়া দেওয়ার অভিযোগ আছে। অথচ বরাবরই অস্ত্রধারীরা রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরেই।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ফেনীতে শুধু ৪ আগস্টের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯ জন। যদিও শিক্ষার্থীদের দাবি, এ সংখ্যা আরও বেশি। এ ছাড়া আহত হন শতাধিক মানুষ। ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক মো. জাবির অর্নব জানান, ৪ আগস্ট নিহত হন শিহাব (২১), সাঈদুল ইসলাম সাইদ (২০), ইশতিয়াক আহম্মদে শ্রাবণ (২৩), শাকিব (২২), সরওয়ার জাহান মাসুদ (২১), সাইফুল ইসলাম (৩৫), আরাফাত (২৩), বিপ্লব (২১) ও মাসুম (২২)। এ ছাড়া ঢাকায় নিহত হন ফেনীর সন্তান আবু বকর সিদ্দিক শিবলু, ইকরাম হোসেন কাওছার ও আবদুল গণি বোরহান। তিনি বলেন, নিহতের সংখ্যা আরও বেশি।

অনেকের নাম-পরিচয় এখনো আমরা সংগ্রহ করতে পারিনি। প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী বিগত সময়ে ফেনীতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নামে দুই শতাধিক অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অবৈধ অস্ত্রের পাশাপাশি বৈধ অস্ত্র দিয়েও গুলি ছোড়ার অভিযোগ আছে।

জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার জানান, অস্ত্র উদ্ধারে উদ্যোগ নেওয়া হবে। আইনের আওতায় আনা হবে অস্ত্রধারীদের। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মুহাইমিন তাজিম ও গাজী সালাহ উদ্দিন জানান, এক দফা দাবি ঘিরে ৪ আগস্ট ব্যাপক সংঘর্ষ হয় ফেনীতে।

শহরের অলিগলিতে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে দেখা যায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের। ভারী অস্ত্র দিয়েও গুলি ছোড়া হয় ছাত্র-জনতার ওপর। শহরের বাসিন্দা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সালাম মিয়া বলেন, সন্ত্রীরা এখন গা-ঢাকা দিলেও তাদের হাতে ভারী অস্ত্র রয়েছে। যে কোনো সময় তারা আবার ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালাতে পারে।

জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জসিম জানান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম হাজারীর নির্দেশে সাধারণ নিরীহ ছাত্রদের পাখির মতো গুলি করে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডাররা। সেসব অস্ত্র এখনো তাদের হাতে হাতে। দ্রুত এসব অস্ত্র উদ্ধার করা না হলে সন্ত্রাসীরা আবারও অরাজকতা শুরু করবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password