লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার হাজীমারা আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালাবদ্ধ একটি ঘরে আসমা আক্তার (৩০) নামের এক গৃহবধূর অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া গেছে। শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে পুলিশ খাটের ওপরে থাকা মরদেহটি উদ্ধার করেছে। স্বামী খোকন গাজীর (৪২) সঙ্গে আসমা ওই ঘরে বসবাস করতেন। খোকন পেশায় শ্রমিক। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।
এদিকে পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে স্বামী আসমাকে হত্যা করেছেন। এরপর তিনি মরদেহ রেখে ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়ে গেছেন। নিহত আসমা উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাচিয়া গ্রামের ওসমান দরজির মেয়ে। তাদের দুজনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, হাজীমারা আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালাবদ্ধ খোকন গাজীর ঘর থেকে শনিবার সকালে পচা-দুর্গন্ধ বের হয়।
তখন আশপাশের লোকজন হাজীমারা পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয়। পুলিশ এসে দরজা খুলে ঘরের ভেতরে নারীর অর্ধগলিত মরদেহ দেখে। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি আশ্রয়ণের ওই ঘরটি স্থানীয় জাকির হোসেনের নামে বরাদ্দ দেয় উপজেলা প্রশাসন। সে ঘরে মাসিক ৫০০ টাকা চুক্তিতে ভাড়া থাকতেন খোকন-আসমা দম্পতি। তাদের মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতো। সর্বশেষ ১৭ আগস্ট আসমা ও খোকনের ঝগড়া হয়। পরে খোকন ঘরে তালা দিয়ে চলে যান।
নিহত আসমার বোন পেয়ারা বেগম বলেন, আসমার স্বামী খোকনের বাড়ি বরিশালে হলেও নারায়ণগঞ্জে বসবাস করতেন। খোকনের সঙ্গে তার পূর্বপরিচয়ের কারণে দুই বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের দুজনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে। আগের সংসারে আসমার দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছে। নিহতের মা অজুফা বেগম বলেন, ‘দুই মাস আগে খোকনকে নিয়ে আসমা নারায়ণগঞ্জ থেকে পৈতৃক বাড়িতে আসে। এরপর এক মাস আগে তারা আশ্রয়ণ প্রকল্পে জাকিরের ঘর ভাড়া নেয়। খোকন এ এলাকায় শ্রমিকের কাজ করত। সে আমার মেয়েকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। আমি এর বিচার চাই।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, খবর পেয়ে ঘরে ঢুকে আসমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার স্বামী পলাতক রয়েছে। ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন