দিল্লিতে শ্মশান আর কবরস্থানগুলাতে জায়গা হচ্ছে না লাশ দাফন ও সৎকারের। মূল শশ্মানে জায়গা না হওয়ায় অনেক অস্থায়ী শশ্মান গড়ে উঠেছে। গাড়ির পার্কিংয়ে, রাস্তার ওপর পুড়ানো হচ্ছে লাশ। কবরস্থানে রাতদিন কবর খুড়তে খুড়তে হয়রান গোরখোদকেরা।
ভারতের দিল্লির এক বাসিন্দা নীতিশ কুমার করোনায় মারা যাওয়া মায়ের লাশ দুই দিন ধরে বাড়িতেই রেখে দিছিলেন। দাহ করার জন্য শ্মশানে এক টুকরো জায়গা পান নাই তিনি। শেষমেশ গাড়ি রাখার এক পার্কিং এ অস্থায়ীভাবে গড়ে উঠা শশ্মানে দাহ করা হয় তার মাকে। কোথায় না গেছি। কিন্তু কিছু না কিছু কারণে খালি হাতে ফিরতে হইছে। চিতা জ্বালানোর জন্য কাঠ নাই বলেও শুনতে হইছে।
ভলান্টিয়ারি সংগঠন শহিদ ভগৎ সিংহ সেবা দলের প্রধান জিতেন্দ্র সিংহ শান্টি বলেন, ‘দিল্লিতে এমন দৃশ্য দেখতে হবে, কেউ ভাবে নাই। বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলা, কারও বয়স ৫, কারও ১৫, কারও ২৫। তাদের দাহ করতে হচ্ছে। সদ্য বিয়া হইছে এমন অনেকের দেহও শ্মশানে আসতেছে। চোখে দেখা যাইতেছে না এসব।
তিনি জানাইতেছেন, এক পার্কিং লটে গড়ে ওঠা অস্থায়ী শ্মশানে বৃহস্পতিবার বিকেলে ৬০টি দেহ দাহ করা হইছে। জায়গা না পেয়ে পড়েছিল আরও ১৫টি দেহ। গত মঙ্গলবার এক শ্মশানেই ৭৮টি দেহ দাহ করা হয়েছে। জিতেন্দ্রর মা নিজে একজন সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী। ১০ দিন আগে কোভিডে আক্রান্ত হন তিনি। এরপরেও কোনো হাসপাতালে জায়গা হয়নি বলে জানাইছেন জিতেন্দ্র। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো জানাইতেছে, শুধু শ্মশানই নয়, রাজধানী দিল্লির কবরস্থানগুলোর অবস্থাও একই।
গুজরাট, মধ্যপ্রদেশের জেলাগুলোতেও শ্মশানের বাইরে মরদেহ নিয়ে সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়ায় থাকতে দেখা গেছে। শ্মশানে দেহ পুড়ার এ ছবি কী করুণ পরিস্থিতি দেখায় দিতেছে আমাদের। গত বছর এমন ড্রোন দৃশ্য দেখা গেছিল নিউইয়র্কে। জায়গা কম পড়ায় থরে থরে কফিন সাজিয়ে ঠিক এভাবেই মৃতদেহ গণকবর দেওয়া হয়েছিল নিউইয়র্কে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন