ইসরায়েলের ওপর ইরানের সরাসরি হামলার হুমকি মিথ্যা বা কথার কথা নয়। বরং ইরানের এই হুমকি ‘বিশ্বাসযোগ্য এবং কার্যকর’ বলে মনে করছে হোয়াইট হাউস। ইসরায়েলের সামরিক সাইটগুলোতে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাতে পারে- এমন সংবাদ প্রচারের পরে হোয়াইট হাউস এই অভিমত ব্যক্ত করল। খবর দ্যা জেরুজালেম পোস্টের।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা যোগাযোগ উপদেষ্টা জন কিরবি বলেছেন, ওয়াশিংটন অবশ্যই জনসাধারণের বিষয়ে সচেতন। ইরানের সম্ভাব্য হামলার হুমকিকে আমরা অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করি। তিনি বলেন, মার্কিন কর্মকর্তারা ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। যাতে তারা যেকোনো হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে। আমরা এবং ইসরায়েলিরা বিষয়টিকে (ইরানের হুমকি) গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট শুক্রবার আইএএফ হাতজোর বিমানঘাঁটিতে মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের কমান্ডার প্রধান জেনারেল মাইকেল এরিক কুরিলার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় বলেন, আমরা আমাদের অংশীদারদের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় জমিন ও আকাশে নিজেদের রক্ষা করতে প্রস্তুত।
কীভাবে আমরা (হুমকি হামলার) প্রতিক্রিয়া জানাতে পারি, তা আমাদের জানা থাকবে। দুয়েক দিনের মধ্যেই ইসরায়েলে হামলা চালাতে পারে ইরান, এমনটা বলছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য। হামলার ভয়ে শুক্রবার সতর্ক অবস্থায় রয়েছে ইহুদিবাদী দেশটি। মধ্য ইসরায়েলের একটি বিমানঘাঁটি পরিদর্শনের সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তারা একাধিক ফ্রন্টে ‘চ্যালেঞ্জিং সময়’ পার করছেন।
দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তার দেশ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ চালানোর পাশাপাশি অন্যান্য এলাকায় পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কার মধ্যে বৃহস্পতিবার তিনি এ কথা বলেন।
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন অভিযানসংক্রান্ত কমান্ডার এরিক কুরিলা নিরাপত্তা হুমকির ব্যাপারে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করতে ইসরায়েল সফরে গেছেন। পেন্টাগন বলেছে, এটি পূর্বনির্ধারিত সফর। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে এর তারিখ এগিয়ে আনা হয়েছে। গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি দূতাবাস প্রাঙ্গণে বিমান হামলায় এক জ্যেষ্ঠ জেনারেলসহ ৭ ইরানি কর্মকর্তা নিহত হন।
এ ঘটনায় প্রতিশোধ হামলা চালানোর হুঁশিয়ারি দেয় ইরান। ইসরায়েল এ হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করেনি। তবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি গত বুধবার বলেছেন, হামলার জন্য ইসরায়েলকে শাস্তি পেতে হবে। মার্কিন দূতাবাস বলেছে, কর্মীদের বৃহত্তর জেরুজালেমের বাইরে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে তেল আবিব ও বির শেভা এলাকা এ সতর্কতার আওতামুক্ত থাকবে। ইরানের হুমকির প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ফ্রান্স, রাশিয়া এবং ভারত ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন