বরগুনার পাথরঘাটা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে থেকে ২১টি বিষধর গোখরা সাপের বাচ্চা ও কয়েকশ সাপের ডিমের খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আদালত ভবনে থাকা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আইনজীবী, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
রোববার (১৮ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে ভবনের ফ্লোর ভেঙে ডিমের খোসা উদ্ধার করেন স্থানীয় সাপুড়ে দুলাল। এর আগে আদালত ভবনে প্রবেশদ্বারের বিভিন্ন স্থান থেকে ২১টি সাপের বাচ্চা বের করে সেগুলো মারা হয়।সাপুড়ে দুলাল জানান, এগুলো বিষধর গোখরা সাপের ডিমের খোসা ও বাচ্চা।
পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার কামাল হোসেন জানান, সকালে আদালতের কাজে অফিসে প্রবেশের সময় পায়ের কাছ থেকে একটি সাপ দ্রুত চলে যায়। কিছুক্ষণ পর আরও কয়েকটি সাপ আদালত ভবনের মেঝেতে চলাচল করতে দেখা যায়। বিষয়টি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত মল্লিককে জানালে তিনিও তার কক্ষ থেকে বেরিয়ে সাপ দেখে আতঙ্কিত হন। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় ২১টি সাপ মারা হয়। কামাল হোসেন আরও জানান, মাসখানেক আগেও আদালত চলাকালীন বিচারকের চৌকির নিচ থেকে দুটি বড় গোখরা সাপ মারা হয়।
আদালতের আইনজীবী মিজানুর রহমান মঞ্জু জানান, পাথরঘাটায় নিজস্ব কোনো আদালত ভবন না থাকায় ২০১৪ সালের মার্চ মাস থেকে পাথরঘাটা সরকারি কেএম পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি স্কুলভবন ভাড়া নিয়ে সেখানে আদালতের বিচার কার্যক্রম চলছে। ভাড়া করা ভবনের অবস্থাও নাজুক। ভবনের চারদিকে দেয়াল ও পিলারে বড় রকমের ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আদালতে নিয়োজিত এক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘ভাবতেই ভয় লাগে যে এতোগুলো বিষধর সাপের সঙ্গে আমারা রাত কাটিয়েছি। নিজস্ব কোনো ভবনের ব্যবস্থা না থাকায় ভবনের নিচতলায় গাদাগাদি করে হাজতখানা ও মালখানার গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রসহ আমাদের রাত্রিযাপন করতে হয়। এতো কাগজপত্র ও মালামালের স্তুপে কত যে সাপ রয়েছে তার অন্ত নেই।’
পাথরঘাটা সরকারি কেএম পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুর আলম বলেন, যেহেতু কয়েকশ সাপের ডিমের খোসা উদ্ধার করা হয়েছে, তাই ভবনের ভেতরে সাপের বাচ্চাসহ বড় গোখরা সাপ রয়েছে। সাপুড়ে দুলালের মাধ্যমে বড় সাপটি ধরার চেষ্টা চলছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন