করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে নওগাঁয় চলছে এক সপ্তাহের বিশেষ লকডাউন। এ সময় পৌর শহর থেকে দূরপাল্লার পরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ চালকই শহর থেকে অল্প দূরত্বে বাস থামিয়ে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন গন্তব্যে।
নওগাঁর পৌর শহরে দূরপাল্লার বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, সব কাউন্টার বন্ধ রয়েছে এবং সেখান কোনো বাস নেই। তবে শহরের বাইরে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারের পাশে পশ্চিম ঢাকা রোডে (নিউ সাহাপুর) বাসগুলো অবস্থান নিয়েছে। ওই এলাকাটিও নওগাঁ সদরের বোয়ালিয়া ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার (৩ জুন) বিকেল থেকে সেখানে বাসের অস্থায়ী কাউন্টার করে দূরপাল্লার যাত্রী আনানেয়া করা হচ্ছে। এতে করে সান্তাহার এলাকায়ও সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতনরা।
একতা বাসের সুপার আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘শহরের ঢাকা বাসস্ট্যান্ড নওগাঁ পৌরসভার এলাকার মধ্যে অবস্থিত। সেখানে লকডাউন চলছে। এজন্য পৌরসভার বাইরে ঢাকা রোডে কাউন্টার করে বুধবার সকাল ৭টা থেকে প্রথম টিপ দিয়েছি। বাসে ওঠার আগে যাত্রীর তেমন স্বাস্থ্যবিধি না মানলেও বাসে ওঠার পর থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য। সচেতনতায় করোনা রোধ করা সম্ভব।’
নওগাঁ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদাক এসএম মতিউজ্জামান মতি বলেন, ‘কিছুদিন আগেও বাস চলাচল বন্ধ ছিল। আবারও বন্ধ হয়ে গেল। শ্রমিকরা খুবই সমস্যা মধ্যে আছি। জেলার অভ্যন্তরীণ লোকাল বাস বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা বেকার হয়ে গেছে। পৌরসভার লকডাউন থাকায় শহরের ঢাকা বাসস্ট্যান্ড ও কাউন্টারগুলো বন্ধ। পশ্চিম ঢাকা রোড সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় সেখানে দূরপাল্লার বাস অবস্থান নিয়েছে।’
নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) কে. এম. এ মামুন খান চিশতী বলেন, ‘নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। জেলা শহরের ২৫টি পয়েন্টে এবং নিয়ামতপুর উপজেলার ১৮টি পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তবে শহরের শপিংমলসহ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নওগাঁর সঙ্গে পাশের জেলা রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরিবহন যোগাযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। আর বাকি এলাকায় লোকজন যাবে বা আসবে।
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূ‚মি) মাহবুবা হক বলেন, ‘বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। এরইমধ্যে বগুড়া জেলা প্রশাসক নির্দেশনা দিয়েছেন নওগাঁ থেকে যেসব পয়েন্ট দিয়ে মানুষ সান্তাহারে প্রবেশ করছে সেসব পয়েন্ট আটকিয়ে দিতে হবে। থানা পুলিশ ও সান্তাহার পৌরসভা মেয়রকে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। নওগাঁর মানুষ সান্তাহারে এবং সান্তাহারের মানুষ নওগাঁয় যাওয়ায় উদ্বেগজনক মনে হচ্ছে।’
উল্লেখ, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে গত ৩ জুন থেকে ৯ জুন পর্যন্ত লকডাউনের ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন