পাহাড়ি ঢলে পানির নিচে একের পর এক গ্রাম

পাহাড়ি ঢলে পানির নিচে একের পর এক গ্রাম

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে নিম্নাঞ্চলে হঠাৎ পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে বাড়ছে সিলেটের নদ-নদীর পানি। অকাল বন্যায় এরই মধ্যে পানির নিচে তলিয়ে গেছে সিলেটের চারটি উপজেলার শতাধিক গ্রাম। পানিবন্দি প্রায় তিন লাখ মানুষ। সুরমা ও সারি নদীর পানি কয়েকটি পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে।

সুরমা কুশিয়ারার মিলনস্থল আমলশীদে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুধু গোয়াইনঘাট উপজেলার ৭৫ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে স্থানীয় প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে। প

র্যটকবাহী নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে। গোয়াইনঘাট উপজেলাতেই খোলা হয়েছে ৫৬ টি আশ্রয়কেন্দ্র। বাড়িঘর ছেড়ে মানুষ ছুটছে সেখানে। বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে কাজ করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি। তবে গবাদিপশু ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চাইছেন না অনেকেই। এ দিকে জকিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর বেড়িবাঁধের প্রায় ২৫০ মিটার ভেঙে গেলে বিজিবির সহায়তায় স্থানীয় লোকজন তা মেরামত করে।

এদিন রাতে ভারতের মেঘালয় থেকেও নামে ব্যাপক ঢল, যাতে বন্যা দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিলেটে ৭০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, গত দুই বছরের মধ্যে মে মাসে সর্বোচ্চ। রাতে মেঘালয় থেকে নামে আরো ব্যাপক ঢল।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসাইন বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতির জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ইতোমধ্যে বৈঠক করেছে। দ্রুত উদ্ধার অভিযান চলছে। সেনাবাহিনীও ইতোমধ্যে রেকি করেছে। প্রয়োজনে তারাও উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণে যোগ দেবে।

এদিকে আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হয়ে গেছে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কসহ চার উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়ক। এতে বহু সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে যোগাযোগে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট উপজেলা পয়েন্টে বিপদসীমার ১৬৬ সেন্টিমিটার ওপরে ও কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জের অমলসীদ পয়েন্টে ২০২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জৈন্তাপুরে সারি নদীর পানি বিপদসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার এবং গোয়াইনঘাটে সারিগোয়াইন নদীর পানি ৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেটের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, ‘২০২২ সালের মে মাসে সিলেট আবহাওয়া অফিস রেকর্ডকৃত বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৮৩৯ মিলিমিটার। ২০২৩ সালের মে মাসে ছিল ৩৩০ মিলিমিটার এবং ২০২৪ সালের মে মাসে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৭০৫ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password